চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনপ্রিয় ইসলামিক আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসির মাহফিলে স্বর্ণালঙ্কার চোর চক্রের ৮ নারী সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের লালাপাড়া সংলগ্ন একটি আম বাগানে তাফসির মাহফিল থেকে তাদের আটক করা হয়। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

আটককৃত নারীদের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার ৫ জন, নরসিংদী জেলার ১ জন, সাভারের ১ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ১ জন। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ড.

মিজানুর রহমান আজহারীর ইসলামিক আলোচনা শোনার জন্য মহিলাদের আলাদাভাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে নারী চোর চক্রের সদস্যরা হিজাব ও বোরকা পরে অবস্থান নিয়েছিল। ইসলামিক আলোচনা চলাকালে ওই চক্রের সদস্যরা কয়েকজনের গলায় হাত দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরির চেষ্টা করছিল। তখনই তাদের একজনকে আটক করে স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে পুলিশে সপোর্দ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের খুঁজে বের করে আটক করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি রইস উদ্দিন বলেন, “আজহারী সাহেবের তাফসীরে স্বর্ণালংকার চোরচক্রের ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

তিনি আরো বলেন, “তাফসির মাহফিলে মোবাইল চুরির ঘটনায় ১৩ জন থানায় জিডি করেছেন। তাদের মোবাইল উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।”

ঢাকা/শিয়াম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ণ ল আজহ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ