ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে ম্যাচের আগে একটি বিতর্কিত ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত বাজানোর পরিবর্তে ভুল করে ভারতের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, যা নিয়ে আইসিসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে ইংল্যান্ডের জাতীয় সংগীত সঠিকভাবে বাজানো হলেও, এরপর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীতের বদলে বাজতে শুরু করে ভারতের জাতীয় সংগীত। উপস্থিত দর্শক-সমর্থকরা এতে বিস্মিত হন, এবং মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আয়োজকদের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পিসিবি এই ভুলের ব্যাখ্যা চেয়ে আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের মতে, “চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সংগীত বাজানোর দায়িত্ব আইসিসির হাতে থাকায় এই ভুলের দায়ও তাদেরই নিতে হবে। বিশেষ করে, যেখানে ভারত পাকিস্তানে খেলছেই না, সেখানে তাদের জাতীয় সংগীত বাজানো হলো কীভাবে?”

যদিও কিছুক্ষণ পর সংশোধন করে অস্ট্রেলিয়ার সঠিক জাতীয় সংগীত বাজানো হয়, তবে ততক্ষণে বিতর্ক তৈরি হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আয়োজকদের কড়া সমালোচনা চলছে, যদিও ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকে এই ঘটনার জন্য সরাসরি পিসিবিকে দায়ী করছেন না।

এ নিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আইসিসির কাছে ব্যাখ্যা চাইলো পিসিবি। এর আগে দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচের সম্প্রচার ক্রিনের এক কোনায় টুর্নামেন্টের লোগো থেকে পাকিস্তানের নাম সরিয়ে ফেলায় ব্যাখ্যা চেয়েছিল সংস্থাটি। পিসিবি মনে করছে, এই ভুলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বাগতিক দেশ হিসেবে পাকিস্তানকে ছোট করা হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস স র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ