নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মমিনুল মোমেন শিকদার ওরফে আনোয়ার হোসেন রাতারাতি ভোল পাল্টে এখন বিএনপি নেতা বনে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আওয়ামীলীগের শাসনামলে সোনারগাঁয়ে শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীর।   

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শামিম ওসমানের পরিচয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গেও ছিল মোমেন শিকদারের ঘনিষ্ঠতা। যা দেখা মিলে বিভিন্ন অন্ষ্ঠুানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মোমিন সিকাদারের সখ্যতার ছবি।

যা দিয়ে দাবড়িয়ে বেড়াতেন এই চতুর মোমেন। এদিকে শামীম ওসমানের সাথে ব্যবসায়িক লেনদেনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন এই মোমেন শিকদার এমনই অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাদের। 

এদিকে, ৫ আগস্টে বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর রাতারাতি ভোল পাল্টে বিএনপি নেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন মোমেন।

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ-৩) আসনের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের সঙ্গেও ছিল তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তার নির্বাচনে মোমেন শিকদার বিপুল পরিমানে অর্থের যোগান দেন বলে জানান সোঁনারগাও বিএনপির তৃনমূলের একাধিক নেতা।

নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত সরকারের আমলেও সে ছবি দেখিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে জাহির করতেন। নিতেন বিশেষ সুবিধা।

এখন পট পরিবর্তনের  পর বিএনপির নেতাদের সাথে ছবি তুলে বিএনপির নেতা পরিচয় দেয় মোমেন। এছাড়া কায়সার হাসনাতের পিএস আশরাফুজ্জান ওরফে জামানের সঙ্গে মিলে ব্যবসাও করেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা মোমেন শিকদার।

মোমেন শিকদার এখন বলে বেড়াচ্ছেন লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। লন্ডনে ওই সিনিয়র নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে নারায়নগঞ্জের বিএনপি নেতাদের তিনি বড় পদ পদবী বাগিয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সোনারগাঁওয়ে স্থানীয় ভাবে বিএনপির ভালো পদে নিজেকে অধিষ্ঠিত করার মিশনে নেমেছেন।

এর মাধ্যমে তিনি নারায়নগঞ্জের কয়েকজন বিএনপি নেতাকে তিনি বিভ্রান্ত করছেন। বিএনপির একটি গ্রুপের সাথে মিলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থেকে সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন আওয়ামী লীগের দোসর মোমেন। তিনি এখন নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করে।

তিনি গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিএনপি সেজে দলে ঢুকে পড়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।’

এ ব্যাপারে মমিনুল মোমেন শিকদার বলেন, লন্ডনে একটা ডিনারে শামীম ওসমানের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। ভাবীসহ শামীম ওসমান আর আমি আমার বউ ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমি ১৭ বছর বিএনপির দ্বারা নির্যাতিত। আমি বাংলাদেশে বিএনপির কোন নেতা না।

আমি ইউরোপে রাজনীতি করি। এখানে কে বিএনপি করলো, কে আওয়ামী লীগ করলো এটা কোন বিষয় না। শামীম ওসমানের ছবি থাকলেই যে আমি খারাপ হয়ে গেলাম এমন না।  

খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা আর এরশাদের ছবি আমার কাছে আছে। তিনজনই বসে হাসাহাসি করতাসে তাতে কি হইসে। এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতিই থাকা উচিত।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও শ ম ম ওসম ন ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ শ ম ম ওসম ন র ব এনপ র র ব এনপ ঘন ষ ঠ হ র কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!

সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। 

এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।  

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। 

এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন। 

এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। 

এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।

একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।

নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।

যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।  

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়। 

২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইলস্টোন স্কুলে হতাহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
  •  শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের স্বাধীনতা চান নাই : টিপু 
  • নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাথে গিয়াসউদ্দিনের মতবিনিময় সভা
  • সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ  
  • বন্দর ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ 
  • তেল চোর দেলোয়ারকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন : টিপু
  • নারায়ণগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ বিএনপি নেতা বহিষ্কার
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
  • কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!