নাহ, গোপন রাখা গেল না ছবি। অনেক কড়াকড়ি ও নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গায়ে হলুদের দিন রাত্রেই ফাঁস হয়ে গেল মেহজাবীন ও রাজীবের ছবি। যদিও তাদের  গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের ছবি তোলায় বিধিনিষেধেল কথা আগেই জানানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার পরও মাইকে ঘোষণা করে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বিষয়টি। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না।  ঠিকই ফাঁস হয়েছে মেহজাবীন চৌধুরীর গায়েহলুদের একাধিক স্থিরচিত্র। 

রোববার ঢাকার অদূরে হয়েছে তাদের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান। এদিন মেহজাবীন পরেছিলেন বেগুনি রঙের লেহেঙ্গা  বর আদনান আল রাজীব পরেছিলেন  কালো রঙের কাবলি পাঞ্জাবি ও পায়জামা।
পাশাপাশি দুজনকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে। তাঁদের পেছনে ছিল বাদ্যযন্ত্রীদের একটি দল।  জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টা থেকে এই গায়েহলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। একই ভেন্যুতে আজ  হবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।

দীর্ঘদিন ধরেই রাজীবের সঙ্গে মেহজাবীনের প্রেমের গুঞ্জন চলে আসছিল। তারা বিয়ে সেরেছেন এমন কথাও চর্চিত ছিল শোবিজ অঙ্গনে। তবে তারা এটি নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। অবশেষে গুঞ্জন সত্যি হলো তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ের ঘোষণার মধ্য দিয়ে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে মেহজাবীন ও আদনানের আক্‌দ সম্পন্ন হয়। তাঁদের বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী ও গাজালা চৌধুরীর আদরের কন্যা মেহজাবীন চৌধুরী এবং বাসেদুল আলম ও সাবেকুন নাহারের ছেলে আদনান আল রাজীবের বিয়েতে আপনি সাদরে আমন্ত্রিত।’ 

জানা গেছে, ঢাকার বাইরে সেই রিসোর্টে বেশ কয়েক দিন ধরে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। গতকাল সকাল থেকেই সেখানে মেহজাবীন ও আদনানের পরিবারের সদস্যরা পৌঁছাতে শুরু করেন। বিনোদন অঙ্গনের অনেক পরিচিত মুখও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে নুসরাত ইমরোজ তিশা, রেদওয়ান রনি, সিয়াম আহমেদ, সাবিলা নূর, এলিটা করিম, আশফাক নিপুণ, সাদিয়া আয়মান, রায়হান রাফী, তমা মির্জা, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল, মোস্তফা কামাল রাজ, জেফার রহমান প্রমুখ ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হজ ব ন চ ধ র ব য় র অন ষ ঠ ন ম হজ ব ন অন ষ ঠ ন আদন ন

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ