স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
Published: 24th, February 2025 GMT
সারা দেশে নারীদের নিরাপত্তা, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ১২টা ২৫ মিনিটে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান ও অবরোধ শুরু করেন। অবরোধ চলাকালে যান চলাচল বন্ধ ছিল, তবে জরুরি পরিষেবার যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত কয়েক দিন দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, ছিনতাই, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতা যে আশা–আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জীবন দিয়েছিল, রক্ত ঝরিয়েছিল, সে আকাঙ্ক্ষার মধ্যে অন্যতম ছিল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। একের পর সন্ত্রাসী কার্যক্রম সামনে এলেও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুনআ. লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে ৯ ঘণ্টা আগেগণ–অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ বলেন, ‘৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে আমাদের সবার আশা–আকাঙ্ক্ষার সরকার গঠিত হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, আমার মা-বোনেরা নির্বিঘ্নে নিরাপদে যখন ইচ্ছা যেখানে ইচ্ছা যেতে পারবেন। আমরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা–বাণিজ্য করতে পারব এবং নিরাপদে চলাচল করতে পারব। ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের যে সেক্টরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা ছিল, আমরা দেখেছি সেই সেক্টরেই সবচেয়ে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। বর্তমান উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম তাঁর পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
আরও পড়ুনরাত তিনটায় কেন সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা১৭ মিনিট আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন?
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।
ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা, চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।