ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে মস্কো ও তেহরান। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবার ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এই অবস্থানের কথা জানান।

লাভরভ তেহরানে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

পরে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কিত ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)’ ঘিরে যে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে, তা নিয়ে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে।

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে জেসিপিওএ সই করে ইরান। দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও রাশিয়া। এই চুক্তির আওতায় ইরান থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। অন্যদিকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজ শুরু করেছিল তেহরান। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার ক্ষমতায় এসে এই চুক্তি থেকে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। তখন থেকে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। পরে জো বাইডেন চুক্তিটি পুনরায় শুরুর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়।

তেহরানে পৌঁছার পর এর আগে লাভরভ বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক চুক্তিকে ঘিরে যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা এখনো কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান করা যায়।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত সপ্তাহে বলেছেন, জাতিসংঘের চাপ সত্ত্বেও ইরান উচ্চ হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রেখেছে। দেশটি যে হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তা বাণিজ্যিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি।

আরও পড়ুনইরান সফরে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কী আলোচনা হবে১৪ ঘণ্টা আগে

তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গ্রোসি বলেছিলেন, গত বছরের শেষের দিক থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি কিছুটা কমিয়েছে ইরান। কিন্তু এরপরও প্রতি মাসে প্রায় সাত কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে দেশটি।

ইরান বারবার দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো দেশ এত বেশি পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে না।

আগামী মাসে গ্রোসির তেহরান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। চলতি বছরে এটাই তাঁর প্রথম ইরান সফর।

রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে সম্প্রতি গভীরতর হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা দিচ্ছে ইরান। গত জানুয়ারি মাসে দুই দেশ একটি কৌশলগত চুক্তি সই করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ