জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম রাখা হয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে বড় জমায়েতের কথা জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসসহ সব উপদেষ্টাকে। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত থেকে শুরু করে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা প্রায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ৫১ দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিকদের।

আরো পড়ুন:

বিএনপির বর্ধিত সভায় ঐক্যের ডাক, ভোটের জোর প্রস্তুতিতে চোখ

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে: তারেক রহমান

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে সরকারপ্রধানের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন এনসিপির নেতারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের নেতৃত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সাইফ মুস্তাফিজ প্রধান।

নেতারা জানিয়েছেন, নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ৩৬টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নাগরিক কমিটি। তবে পতিত আওয়ামী লীগের সরকারের শরিক ১৪ দলের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু করেছি। প্রধান উপদেষ্টা ও সব উপদেষ্টাদেরকেও আমরা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছে সকল রাজনৈতিক দলকেই আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর ইচ্ছে রয়েছে।”

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে আমন্ত্রণ

বৈষম্যবিরোধীদের নতুন দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’
‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে’ নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের নতুন রাজনৈতিক দলের নাম চূড়ান্ত করেছে। ছাত্রদের দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দলটির পক্ষ থেকে নতুন নাম চূড়ান্ত করা হয়। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হবে। সেখানে দলের শীর্ষ পদে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হবে।

জানা গেছে, নতুন দলের শীর্ষ ৬ পদে থাকছেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক হচ্ছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। হান্নান মাসুদ হচ্ছেন যুগ্ম সমন্বয়ক।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জ ত য় ন গর ক প র ট সমন বয়ক উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ