জাতীয় নাগরিক পার্টি: আত্মপ্রকাশ বিকেলে, কে কোন পদে আসছেন
Published: 28th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। তরুণদের নতুন এই দলের নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বড় জমায়েতের লক্ষ্য রয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের।
নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও অর্গানোগ্রাম (কাঠামো) নির্ধারণ এবং আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠক হয়। এই বৈঠকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সেখানে নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ সাতটি পদে কারা আসছেন, সেসব নাম চূড়ান্ত হয়। একই সঙ্গে দলের নাম (জাতীয় নাগরিক পার্টি) চূড়ান্ত করা হয়।
নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় এই পদের দায়িত্ব কে পাচ্ছেন তা গতকালের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিবের দায়িত্ব একজন নারীকে দেওয়া হতে পারে।এই বৈঠকে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে নতুন দলের প্রধান সমন্বয়কারী, সামান্তা শারমিনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, আবদুল হান্নান মাসউদকে যুগ্ম সমন্বয়ক, হাসনাত আবদুল্লাহকে মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল), সারজিস আলমকে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) ও সালেহউদ্দিন সিফাতকে দপ্তর সম্পাদক পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে। নাসীরুদ্দীন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক, সারজিস মুখ্য সংগঠক ও সালেহউদ্দিন সহমুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অন্যদিকে হাসনাত আবদুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও আবদুল হান্নান মাসউদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরও পড়ুনতরুণদের দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’, শীর্ষ আট পদে নাম চূড়ান্ত১৫ ঘণ্টা আগেনতুন এই দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন মো.
নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় এই পদের দায়িত্ব কে পাচ্ছেন তা গতকালের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিবের দায়িত্ব একজন নারীকে দেওয়া হতে পারে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন তাসনিম জারা, নাহিদা সারোয়ার (নিভা), মনিরা শারমিন ও নুসরাত তাবাসসুম। তাঁদের মধ্যে তাসনিম জারা ও মনিরা জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাহিদা সারোয়ার কেন্দ্রীয় সদস্য। আর নুসরাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য।
গতকাল সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় (এখন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) গিয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদল। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ ও নুসরাত তাবাসসুম এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা এস এম সাইফ মোস্তাফিজ। পরে ফেসবুকে অধ্যাপক ইউনূসকে আমন্ত্রণপত্র দেওয়ার ছবি পোস্ট করেন হান্নান।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মিডিয়া সেল সূত্র জানায়, বিএনপি, সিপিবি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ ও এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বেশির ভাগ মানুষ নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নামটি প্রস্তাব করেছিলেন। যে কারণে ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নামটি বেশি আলোচনায় ছিল। তবে এই নামের সংক্ষিপ্ত রূপ কেউ কেউ ‘বিএনপি’ করতে পারে এমন চিন্তা থেকে শেষ পর্যন্ত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ বেছে নেওয়া হয়।জনমত জরিপের আলোকে দলের নাম নির্ধারণ
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক কমিটির যাত্রা শুরু হয়। এই দুই প্ল্যাটফর্মের যৌথ উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হচ্ছে। অবশ্য দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
নতুন দলের বিষয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে জনমত জরিপ শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। অনলাইনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হয়। জরিপে দুই লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন।
জরিপে নতুন দলের নাম কী হতে পারে, সে বিষয়ে মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। বেশির ভাগ মানুষ নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নামটি প্রস্তাব করেছিলেন। যে কারণে ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নামটি বেশি আলোচনায় ছিল। তবে এই নামের সংক্ষিপ্ত রূপ কেউ কেউ ‘বিএনপি’ করতে পারে এমন চিন্তা থেকে শেষ পর্যন্ত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ বেছে নেওয়া হয়।
প্রথমে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। অবশ্য পরে প্রস্তুতির জন্য আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান আরও দুই দিন পিছিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করার সিদ্ধান্ত হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে এই দিনক্ষণ জানান সারজিস আলম।
বড় জমায়েতের লক্ষ্য
আজ বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বড় জমায়েত করতে চান জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। অনুষ্ঠানটি বেলা তিনটায় শুরু হবে।
গতকাল রাতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতা–কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা অংশ নেবেন। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই মানুষ আসবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। বেলা তিনটায় শুরু হয়ে সন্ধ্যার আগেই অনুষ্ঠান শেষ হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ য গ ম সদস যসচ ব ম খ য স গঠক দল র ন ম ন ত হয় দল র জ র জন য গতক ল আসছ ন ব এনপ ইসল ম আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল