ত্বকী হত্যার বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
Published: 2nd, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার দাবিতে দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। রোববার দুপুরে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জে কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হচ্ছে, অথচ আজও এর অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে বিচারকার্য শুরু হয়নি। আমরা এ দীর্ঘ সময় বহুবার বিবৃতি দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে, সমাবেশ ও সংবাদপত্রে লেখনীর মাধ্যমে এ হত্যার বিচার চেয়েছি। কিন্তু বিগত সরকারের সময় তাদের ইচ্ছাতে সাড়ে ১১ বছর এ বিচারকার্য বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। গত ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর অপরাধী কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে মামলাটিতে নতুন করে গতি সঞ্চার হয় এবং আমরা আশাবাদী হয়ে উঠি। কিন্তু আমরা লক্ষ করলাম, এখন আবার বিচারপ্রক্রিয়ায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আমরা সব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে দ্রুত বিচারকার্য শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ভাষাসংগ্রামী ও বিশিষ্ট লেখক আহমদ রফিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার, মানবাধিকারকর্মী বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষাবিদ সলিমুল্লাহ খান, আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, লেখক ও নারীনেত্রী মালেকা বেগম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণশিল্পী কফিল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ‘নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে।’ তবে সে অভিযোগপত্র আজও পেশ করা হয়নি। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।