রমজানে লোডশেডিং বন্ধে সবার সহযোগিতা চাইলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা
Published: 3rd, March 2025 GMT
আসন্ন গ্রীষ্ম ও সেচ মৌসুম এবং পবিত্র রমজান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাশ্রয়ী হতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার বিকেলে কাকরাইল সার্কিট হাউস মসজিদে মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে গিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান একথা বলেন। পরিমিত ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এই মতবিনিময় করা হয়।
মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে যাতে আর কোনো কষ্ট না হয় তার জন্য আপনাদেরও সহযোগিতা লাগবে।’
এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির নিচে না নামানোর জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, তা না হলে অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ হবে। লোডশেডিং এর কবলে পড়তে হতে পারে। মসজিদ ছাড়াও বাসা-বাড়ি, দোকান, শপিং মল, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনে যাতে অতিরিক্ত আলোকসজ্জা এবং অপ্রয়োজনীয় ফ্যান–লাইট না চলে, সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিকদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশে জ্বালানি সংকট রয়েছে। গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। চাহিদা পূরণে জ্বালানি আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শীতকালে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট। গরমকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে তা বেড়ে ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। সেচের জন্য দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়্র। সেচ বন্ধ করা সম্ভব নয়, এতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। বাকি পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট প্রয়োজন হয় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও অতিরিক্ত আলোকসজ্জায়। এজন্য এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে বেধে দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত এক কার্গোসহ মোট চার কার্গো জ্বালানি আমদানি করা হচ্ছে। জনগণ যদি সচেতন হয় এবং অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে, তাহলে এই রমজান মাসে কোনো লোডশেডিং হবে না।
অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, গ্যাসের মতো বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র জন য রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।