সিদ্ধিরগঞ্জে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী দোসর আজমেরী ওসমানের ক্যাডার দেলোয়ার হোসেন দেলু। আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেলু মিশে যায় বিএনপির ছায়াতলে। এরপরমোটা অংকের বিনিময়ে তরুন দলের পদ বাগিয়ে নিলেও শেষ পর্যন্ত তা রক্ষা করতে পারেনি। 

এরফলে দেলু ফের আত্মগোপনে চলে গেলে আবারও প্রকাশে ফিরেছে স্বরূপে। ফিরেই দেলু ও তার বাহিনী প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে হোন্ডা মহড়া দিয়ে সৃষ্টি করছে আতংক। আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগীতায় নেমেছে মাঠে। 

সচেতন মহল বলছে সন্ত্রাসী এই দেলুকে আইন-শৃংখলাবাহিনী এখনই না রুখলে বড় ধরণের নাশকতা ও প্রানহানীসহ বিঘ্ন হবে শান্তি শৃংখলা। দেলোয়ার হোসেন দেলু গোদনাইল পাঠানটুলী আইলপাড়া এলাকার শাহজাহান ড্রাইভারের ছেলে ।

জানাগেছে, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর শামীম ওসমানসহ এলাকার অন্য নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলেও কিছু দিন যেতে না যেতেই নারায়ণগঞ্জের হাজী সাহেব হিসেবে পরিচিত আজমেরী ওসমানের আস্থাভাজন সন্ত্রাসী ক্যাডার দেলোয়ার হোসেন দেলু বিএনপি নেতাদের সাথে আতাত করে শুরু করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। 

বিগত আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের হাজী সাহেব হিসেবে পরিচিত গণহত্যাকারী আজমির ওসমানের হয়ে বিভিন্ন মানুষকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বর্বশান্ত করে দিয়েছে অনেক পরিবারকে। 

এছাড়াও পাঠানটুলী এলাকার যুবলীগের নেতা ভুমিদস্যু শাহজাহান ও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহর অন্যতম সহযোগি হিসেবে দেলুর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। দেলু মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী এবং অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন। হত্যা, অপহরন, মারামারি, মাদকসহ অস্ত্র মামলা রয়েছে দেলুর বিরুদ্ধে। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেলু অস্ত্রসহ সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও আজমিরি ওসমানের সাথেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জনতার উপর গুলি চালিয়েছিল। এরপর স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের পতনের পর ভোল পাল্টিয়ে বিএনপি নেতা হওয়ার চেষ্টায় দেলু যথেষ্ট টাকা পয়সা খরচ করেছে। মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী হওয়ার পরও প্রকাশ্যে বিএনপির ছত্র ছায়ায় মিশে গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। 

৮নং ওয়ার্ড বিএনপিসহ সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে দেলু রামরাজত্ব চালাচ্ছে। এই দেলুর কারনে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে রয়েছে। 

এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একজন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী দেলু প্রকাশ্যে হোন্ডার মোহরা দিয়ে আতংক সৃষ্টি করে ঘোরাফেরা করলেও থানা পুলিশ রয়েছে নিরব। অথচ পুলিশ বলছে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, বিএনপির কিছু পাতি নেতা ও জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতার শেল্টারে দেলোয়ার হোসেন দেলু বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সভা সেমিনারে দেলু বাহিনীকে ব্যবহার করছে এবং তাকে দিয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি ও রাহাজানির সাথে উতোপ্রতোভাবে দেলু বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নিচ্ছে। 

এই দেলু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে উল্টো প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এদিকে, পুলিশের খাতায় দেলু পলাতক থাকলেও নারায়ণগঞ্জ শহরের এবং সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তাকে প্রকাশ্যেই দেখা যাচ্ছে। এলাকার নাশকতা প্রতিরোধ ও শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের ক্যাডার দেলুকে আইননের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ স দ ধ রগঞ জ ওসম ন র ব যবস য় সরক র র ব এনপ র এল ক র আজম র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।

নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।

নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।

তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা। 

এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।

তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা। 

এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। 

তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।

চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না। 

এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। 

এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই। 

তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো? 

আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।

এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

 এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
  • ফতুল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • সোনারগাঁয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির চিঠি
  • নারায়ণগঞ্জে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদল নেতা রিয়াদের দুই মেয়ে গুরুতর আহত : দোয়া প্রার্থনা 
  • আড়াইহাজারের সেপটি ট্যাংকির ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
  • বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে