‘উইকেট শিখিয়ে দেয় ক্রিকেট কীভাবে খেলতে হবে তারপরে সুইচ অন করি’
Published: 5th, March 2025 GMT
বিরাট কোহলির আরেকটি অসাধারণ ইনিংস, আরেকটি শিরোপার ফাইনালে ভারত। তার ব্যাটে রান মানে ভারতের মুখে হাসি। এ যেন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালের মঞ্চে পুরোনো কিছুই ঘটল। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৬৫ রানের লক্ষ্য ভারত সহজে ৪ উইকেট হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে। ৯৮ বলে ৮৪ রানের ঝকঝকে ইনিংসে উজ্জ্বল ছিলেন বিরাট। ২২ গজে অসাধারণ ইনিংস খেলায় প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও পেয়েছেন।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে ব্যাটিং সহজ ছিল না তা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থেকে বোঝা যাচ্ছিল। বিরাট সময় নিয়ে নিজের ইনিংস বড় করেছেন। ১৩৫ মিনিট কাটিয়েছেন ক্রিজে। জাম্পার বলে সীমানায় ক্যাচ দেওয়ার আগ পর্যন্ত একটিও আলগা শট খেলেননি। জয়ের প্রয়োজনীয়তা বুঝে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। তাতে সুফল পেয়েছে ভারত। তার ব্যাটে ভর করে সহজেই পৌঁছে গেছে ফাইনালে।
আরো পড়ুন:
আর কিছু রানের আক্ষেপ করলেন স্মিথ
ভারতকে ফাইনালে তুলে রোহিতের অনন্য রেকর্ড
বিরাটের ইনিংসটি ছিল একেবারেই ধীর স্থির। আগ্রাসন একেবারেই দেখাননি। উইকেটের চারিপাশে সিঙ্গেল বের করে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। কঠিন পরিস্থিতিতে গিয়ে উইকেট আগলে ব্যাটিং করে গেছেন অনায়েসে। তাতেই খুশি বিরাট, ‘‘আমি হতাশ বোধ (আক্রমণাত্মক ব্যাটিং) করছিলাম না, এবং আমি বেশ খুশি ছিলাম। ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনার কাজ ফাঁকা জায়গায় বল মেরে এক রান আদায় করা। এজন্য গর্ববোধ করা উচিত। তাতেই আপনি বুঝে যাবেন আপনি ভালো ক্রিকেট খেলছেন এবং আপনি একটি বড় জুটির জন্য প্রস্তুত।’’
তার ব্যাটিং ইনিংসের গভীরতা সেই কথাই বলছে। ৮৪ রানের ইনিংসে ৫৬ রান নিয়েছেন সিঙ্গেল। ডাবল ছিল কেবল ৪টি। বাউন্ডারি পেতেই হবে কিংবা তেড়েফুড়ে রান নিতে হবে এমন মানসিকতায় ব্যাটিং করেননিট। ইনিংসে মাত্র পাঁচটি বাউন্ডারি ছিল, কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এতে মোটেও দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন না।
নিজের উপর প্রবল আস্থা এবং উইকেট ও পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করায় হাসি ফুটেছে তার মুখে, ‘‘আমার কাছে পরিস্থিতি বোঝা, সেই অনুযায়ী আমার খেলা প্রস্তুত করা, স্ট্রাইক রোটেট করা গুরুত্বপূর্ণ। এই উইকেটে বড় জুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আজ আমার চেষ্টা ছিল পর্যাপ্ত জুটি গড়া।’’
‘‘উইকেট আমাকে শিখিয়ে দেয় ক্রিকেট কীভাবে খেলতে হবে এবং তারপরে আমি কেবল সুইচ অন করে সেই অনুযায়ী খেলি। এই খেলাটি চাপের। বিশেষ করে সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। যখন আপনি পর্যাপ্ত উইকেট হাতে রেখে ইনিংসের গভীরে যাবেন এবং প্রতিপক্ষ সাধারণত হাল ছেড়ে দেয় তখন খেলাটি সহজ হয়ে যায়।’’
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন বিরাট। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর যা ছিল তার প্রথম সেঞ্চুরি। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল তার। কিন্তু ৮৪ রানে আটকে যেতে হয় তাকে। যা নিয়ে একটুও মন খারাপ নেই তার।
‘‘আমি কখনই এই বিষয়গুলির (মাইলফলক) উপর মনোযোগী নই। আপনি যখন ওই মাইলফলকগুলোর কথা ভাববেন না, তখন দেখবেন জয়ের সঙ্গে ওগুলোও চলে আসছে। আমার কাছে গর্বের জায়গা হলো, দলের প্রতি নিজের কাজটা ঠিকঠাক মতো করা। সেক্ষেত্রে যদি আমি তিন অঙ্ক ছুঁতে পারি তাহলে ভালো। যদি না পারি, যেমনটা আজকের রাতের মতো…ড্রেসিংরুমে আনন্দের হাওয়া বইছে। আপনাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে উইকেটে আপনি কতটা প্রভাব রাখতে পেরেছেন। এরপর আপনাকে আবার নতুন করে শুরু নিয়ে ভাবতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে এবং আবার কাজ শুরু করতে হবে।’’
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিলেন বিরাট। ২০১৭ সালে তার নেতৃত্বেই ভারত ফাইনাল খেলেছিল। শিরোপা জিততে পারেনি। এবার বিরাটের সামনে শিরোপা পুনরুদ্ধারের বড় সুযোগ। তার ব্যাটে আরেকটি মাস্টারক্লাস ভারতকে আরেকবার চ্যাম্পিয়ন্স তো করতেই পারে।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় ঠেলাগাড়ির শ্রমিক নিহত
রাজধানীর চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় সোহাগ হাওলাদার (৩০) নামের ঠেলাগাড়ির এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে চকবাজারের নাজিমুদ্দিন রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সহকারী প্রধান কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কেরানীগঞ্জ থেকে কারা সদর দপ্তরের দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি। ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন মনসুর নামের এক চালক। নাজিমুদ্দিন রোডে পৌঁছালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সোহাগের সহকর্মীরা বলেন, দুপুরে আগামাছি লেন থেকে তাঁরা চারজন মিলে ঠেলাগাড়িতে ইট বহন করে নাজিমুদ্দিন রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। নাজিমুদ্দিন রোডের বড় মসজিদের সামনে পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি প্রিজন ট্রাক ঠেলাগাড়িতে ধাক্কা দেয়। এতে সোহাগ সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে সোহাগকে উদ্ধার করে বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহাগের সহকর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসী ট্রাক ও চালককে আটক করেছেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, সোহাগের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
নিহত সোহাগের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলায়। বাবার নাম দুলাল হাওলাদার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সোহাগ কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় থাকতেন।