গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
Published: 6th, March 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩৩ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অস্বাভাবিক অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং তাঁর স্ত্রী হাসিনা গাজীর নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা দুটি হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) ও মুখপাত্র আক্তার হোসেন।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি এবং সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে মামলায় ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ছয়টি ব্যাংক হিসাবে ২৫৭ কোটি ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে ৪৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়, যার মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয় ৪২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
অন্য মামলায় গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ করা হয়েছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন, ভোগদখল এবং অস্বাভাবিক লেনদেনে সহযোগিতার অভিযোগে এ মামলায় তাঁর স্বামী গোলাম দস্তগীরকেও আসামি করা হয়েছে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ঢাকায় গেরিলা আক্রমণ পরিচালনাকারী তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের দল ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য ছিলেন তিনি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত ২৫ আগস্ট ঢাকার শান্তিনগর এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় গোলাম দস্তগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।