নিষেধাজ্ঞায় থেমে নেই জাটকা নিধন, ক্রয়-বিক্রয়
Published: 6th, March 2025 GMT
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও শিবালয়ের পদ্মা-যমুনায় থেমে নেই জাটকা নিধন ও ক্রয়-বিক্রয়। জেলেরা প্রকাশ্যে জাটকা ধরে বাজারে বিক্রি করছে।
গত বছর ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছর ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা (১০ ইঞ্চি বা ২৫ সে.মি. বাচ্চা ইলিশ) আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও তা মানছে না জেলে ও ক্রেতা-বিক্রেতারা। হরিরামপুর ও শিবালয়ের পদ্মানদীতে নিয়মিত জাটকা আহরণ ও হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে শিবালয়ের যমুনা নদীতে জাফরগঞ্জ, বাঘুটিয়া, জিয়নপুর এলাকায় জাটকা মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।
গত শনিবার সকালে আন্ধারমানিক আড়তের সুবলের খোলা থেকে জুয়েল নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে জাটকা বিক্রির সময় আটক করা হলেও অদৃশ্য সুপারিশে তাঁকে সামান্য মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় উপজেলা মৎস্য অফিস।
গতকাল বুধবার সকালে আন্ধারমানিক আড়তে গিয়ে দেখা যায়, মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া সেই মাছ ব্যবসায়ী জুয়েল সুবলের আড়তে প্রায় চার কেজি জাটকা বিক্রির জন্য ডাক উঠিয়েছেন।
উপজেলার বাহিরচর গ্রামের কাঠমিস্ত্রি সুরেশ জানান, সকালে সুবলের আড়ত থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় জাটকাসহ অনান্য মাছ কিনেছেন। সব মাছের আকার তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি।
আড়তদার রাধু রাজবংশী জানান, তাদের আড়তে জাটকা বিক্রি হয় না। মাঝেমধ্যে চরের জুয়েলসহ কয়েকজন জাটকা এনে আড়তেই বিক্রি করেন। নিষেধ করা হলেও তারা শোনেন না।
ঢাকার ধামরাই থেকে হরিরামপুরে মাছ কিনতে এসেছেন বিমল রাজবংশী। তিনি জানান, এখানে প্রায় প্রতিদিনই জাটকা বিক্রি হয়। মাঝেমধ্যে তিনিও জাটকা কিনে ধামরাইয়ে গিয়ে তা বিক্রি করেন। এতে কেউ তাঁকে বাধা দেয়নি।
হরিরামপুর উপজেলা ইলিশ প্রকল্পের ক্ষেত্র সহকারী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার একজনকে আটক করে মানবিক কারণে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছেন। এবার তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুর রহমান জানান, কেউ যাতে জাটকা ধরতে না পারে সেজন্য উপজেলাগুলোর মৎস্য কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান জোরদার করা হবে বলে তিনি জানান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।