নরসিংদীর রায়পুরা থানার ভিতরে ফিল্মি কায়দায় মাফিয়া গ্যাং স্টাইলে কয়েকজন যুবকের বেপরোয়া আচরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। 

বুধবার (৫ মার্চ) প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রাতে একটি মাইক্রোবাসের সামনে ও ছাদে উঠে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে ছবি তুলেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাইক্রোবাসের দরজা খুলে, কেউবা ছাদে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ গুণ্ডা-বখাটে ধাচের ভঙ্গিতে পোজ দিয়েছে।

এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন। তারা মন্তব্য করেছেন- “রায়পুরা থানা কি কিশোর গ্যাংয়ের দখলে?” আবার কেউ কেউ এটিকে চরম বেপরোয়া মনোভাবের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন।

জানা গেছে, রমজানের প্রথম দিন রোববার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো.

আরমান মিয়া আইনি পরামর্শ নিতে থানায় যান। তার সঙ্গে ওই যুবকরাও থানার সীমানার ভেতরে প্রবেশ করেন। আরমান মিয়া থানার ভেতরে প্রবেশ করলে বাইরে দাঁড়িয়ে তারা বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলে। 

ছবিতে ৭ জন যুবককে লক্ষ্য করা যায়। তাদের বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২০ বছর হবে। বুধবার (৫ মার্চ) মাফিয়া ভঙ্গিমায় তোলা ছবিগুলো টিকটিকে আপলোড করে তারা। পরে এটি নেটিজেনদের নজরে এলে ফেসবুক জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

মরজাল ইউনিয়নের প‍্যানেল চেয়ারম্যান মো. আরমান মিয়া বলেন, “প্রথম রমজানের দিন ইফতারের পরে আমি রায়পুরা থানাতে যাই একটি বিষয় নিয়ে। আমি থানাতে যাওয়ার পর তারা এই মাইক্রোবাস নিয়ে থানায় আসে ফুটবল খেলার অতিথি করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি তখন তাদের সাথে এই ব‍্যাপারে কথা বলি কিন্তু কোন সময় তারা এই অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ছবি তুলেছে তা আমি দেখিনি। তারা এসব ছবি তুলেছে টিকটকে দেওয়ার জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “ছেলেগুলো খুব ভালো। কেউ কেউ ব্যবসা করে। আর কেউ কেউ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত। উপজেলার অলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূইয়া মাসুদের সাথে আমার ব্যবসায়িক কিছু লেনদেন আছে এবং আমি তাদের কিছু অনিয়মের কাজে বাধা প্রদান করায়, তাদের কিছু আওয়ামী মাইন্ডের লোকেরা কারসাজি করে ফাঁসানোর জন্য এই কাজগুলো করেছে। তবে ছেলেগুলো খুবই ভালো, তারা কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত নয়।”

রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, “বিষয়টি আমরাও আজকে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। ওই দিন মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান মিয়া থানায় একটি আইনি কাজে এসেছিলেন। উনার কাছেই ছেলেগুলো এসেছিল। উনাকে ডেকে এনে কথা বলার পর উনার মাধ্যমেই দুই একজনের পরিচয় সনাক্ত করতে পেরেছি। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এগুলো টিকটকের জন্য করা হয়েছে বলে জানায়।” 

তিনি আরো বলেন, “এটা আমরা নিজেরাও তদন্ত করছি, কীভাবে তুলল, এই সুযোগটাই কীভাবে পেলো? আমাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখছি, প্রযুক্তির সকল টেকনোলজি ব্যবহার করে আমরা হার্ডলাইনে কাজ করছি। পরবর্তীতে যেন এই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে।”

ঢাকা/হৃদয়/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন য ন র আরম ন ম য র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ