যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যবস্থাকে ‘ধ্বংস’ করছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের বৈদেশিক নীতি পরিচালনার পদ্ধতির সমালোচনা করে ভ্যালেরি জালুঝনি জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস ‘সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

গত শুক্রবার ওভাল অফিসে প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তেজনা শীতল হওয়ার মধ্যে তার মন্তব্য এলো।

জেলেনস্কিকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বন্ধ করার পর, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে কিয়েভ ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে এক সম্মেলনে জালুঝনির মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের উপর কিয়েভের অসন্তোষ রয়ে গেছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরিকল্পনা জমা দেবে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য

ট্রাম্পের সঙ্গে ঝড় তুলে লন্ডনে জেলেনস্কি, যুদ্ধের পরিণতি কী

জালুঝনি এক শ্রোতাকে বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এটি কেবল মন্দের অক্ষ এবং রাশিয়া-ই নয় যারা বিশ্বব্যবস্থা সংশোধন করার চেষ্টা করছে, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশেষে এই ব্যবস্থা ধ্বংস করছে।”

ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা দেখায় যে হোয়াইট হাউস ‘ক্রেমলিনের পক্ষে পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালে লন্ডনে কিয়েভের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেন জালুঝনি।

তিনি জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে ন্যাটোর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হতে পারে। মস্কোর পরবর্তী লক্ষ্য ‘ইউরোপ হতে পারে’ বলেও সতর্ক করেছেন জালুঝনি।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ব যবস থ ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ