নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের প্রকাশ্য কার্যক্রম ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যর্থতার অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।

এ সময় সমাবেশ থেকে ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘সন্ত্রাসবাদের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘উগ্রবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তিপাক’, ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলের পতনের পর থেকে হিজবুত তাহ্‌রীর মতো অনেকগুলো জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা বেড়ে গেছে। যারা আগের মতো হাসিনার সেই বাকশালি থিওরি বাস্তবায়ন করছে, যারা হাসিনার মতবাদকে লালন করবে, তাদের পরিণত হাসিনার মতোই হবে।’

আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা দেখেছি, হিজবুত তাহ্‌রীর উগ্রবাদের চর্চা করেন। আমরা ৫ আগস্টের পর থেকে দেখছি, তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী? আমরা আজকে বলতে চাই, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদের গ্রেপ্তার করে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে হিজবুত তাহ্‌রীরের মতো জঙ্গি সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আজকে তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে মিছিল করেছে, যা উদ্বেগজনক।

দীর্ঘ ছয় মাস পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘আজকে আমরা দেখেছি, পুলিশ প্রশাসন নামমাত্র তাদের বাধা প্রদান করেছে। আমরা বলে দিতে চাই, এ বাংলায় উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই হবে না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পাঁয়তারা চলছে। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে নারীদের অসম্মান করে, যৌন হয়রানি করে, ধর্ষণ করে, তাদের এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অসংখ্য মানুষের জীবন দিয়ে এ স্বাধীনতা পেয়েছি জঙ্গিবাদের আখড়া বানাতে নয়। আজকে যখন হিজবুত তাহ্‌রীর বায়তুল মোকাররমের সামনে মিছিল করছে, তখন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। তারপরও তারা কেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তার জবাব দিতে হবে।’

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ