হাওরে মাছ লুট নিয়ে সংঘর্ষ গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
Published: 8th, March 2025 GMT
নেত্রকোনায় হাওরে মাছ শিকার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকালে খালিয়াজুরী উপজেলার রসুলপুর গ্রামের পাশে ধনু নদীর ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানান, নেত্রকোনার খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার বিভিন্ন জলমহালের মাছ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে লুটপাটের মহাৎসব করছেন স্থানীয়রা। কয়েক দিন ধরে ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার হাজারো লোকজন সমাবেত হয়ে হাওরের মাছ লুট করছে। গত এক সপ্তাহে মদন উপজেলার নুরেশ্বর বিল, খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বিল, কারি বিল, উচাবাইদা বিল, হাইলা বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলের মাছ লুট করা হয়েছে। প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করেই এমন ঘটনা ঘটছে। যেসব বিলের মাছ লুট হয়েছে, সেগুলোর ইজারা মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা।
অন্যদিনের মতো শনিবার সকালেও খালিয়াজুরী উপজেলার কাঁঠালজান ও মরাগাঙ্গের মাছ লুট করার জন্য ধনু নদীর পারে জমায়েত হয় হাজারো মানুষ। পরে মাছশিকারিরা রসুলপুর ফেরিঘাটের পাশে তাদের পরিবহনের শতাধিক পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, হ্যান্ড ট্রলি, মোটরসাইকেল রেখে ধনু নদী পার হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ফেরিঘাটের লোকজনের সঙ্গে মাছশিকারিদের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। উভয়পক্ষের অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন বহিরাগত মাছশিকারিদের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গাড়িতে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহিরাগত মাছশিকারিরা ফেরি দিয়ে ধনু নদী পার হওয়ার সময় তাদের গালমন্দ শুরু করে। তারা প্রতিবাদ করায় মারধর করতে থাকে। এ সময় সংঘর্ষ বাধলে হাজারো মানুষ রসুলপুর ফেরিঘাটের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে রসুলপুর গ্রামে বসতবাড়িতে হামলা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আহত একাধিক মাছশিকারি জানান, তারা খবর পেয়ে মাছ ধরার জন্য ধনু নদীর পারে যান। সেখানে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল। হঠাৎ সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন একত্র হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সবাইকে মারধর শুরু করে। তারা গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নয়ন ঘোষ জানান, হাসপাতালে ১৫-২০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকার করতে গিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। সব রোগী একসঙ্গে আসায় নাম-পরিচয় সঠিকভাবে জানা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক রোগী আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যাচ্ছেন।
খালিয়াজুরী থানার ডিউটি অফিসার এসআই তোফাজ্জল হোসেনের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মী মৃণাল কান্তি দেব বলেন, খালিয়াজুরী হাসপাতালে ২০-২৫ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ৫০ জনকে আটক করেছে।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর ও আহতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু লোককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। পুরো তথ্য দিতে সময় লাগবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ উপজ ল র স ঘর ষ ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, চালক আটক
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে চলন্ত বাসে এক কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বাসচালককে আটক করেছেন স্থানীয়রা। এসময় পালিয়ে গেছেন চালকের সহকারী।
রবিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার আউশকান্দির তিনতালাব পুকুরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক বাসচালক সাব্বির মিয়া (২৫) উপজেলার ইনাতাবাদ বাংলাবাজার এলাকার ছাতির আলীর ছেলে। পালিয়ে যাওয়া হেলপার লিটন মিয়া সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা।
নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো. দুলাল মিয়া বলেন, ‘‘রবিবার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের উদ্দেশে বাসে উঠেন ওই কলেজছাত্রী। শায়েস্তাগঞ্জে নামার কথা থাকলেও বাসে ঘুমিয়ে পড়ায় তাকে নামিয়ে দেওয়া হয় শেরপুরে। পরে বাড়ি ফেরার জন্য মা এন্টারপ্রাইজের একটি লোকাল বাসে উঠেন তিনি। বাসটি আউশকান্দিতে পৌঁছালে অন্য যাত্রীরা নেমে যান। এরপর চালক ও হেলপার ওই ছাত্রীকে বাসের ভেতরে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগীর চিৎকারে স্থানীয়রা বাস থামিয়ে চালককে ধরে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে।’’
আরো পড়ুন:
রাজবাড়ীতে ২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
ঢাকা/মামুন/রাজীব