২৫ এপ্রিল থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে বাংলাদেশের ‘জংলি’
Published: 9th, March 2025 GMT
নির্মাতা এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমাটি ঈদে মুক্তির ঘোষণা এসেছিল আগেই, এবার এলো বিশ্বব্যাপী মুক্তির ঘোষণা। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সিনেমার প্রচার-প্রচারণা। ঈদুল ফিতরে দেশে মুক্তি পর ২৫ এপ্রিল বিদেশে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। বিদেশে সিনেমাটির পরিবেশক হিসেবে থাকবে যথাক্রমে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো, বঙ্গজ, রিভেরিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
সোমবার জংলি সিনেমার নতুন পোস্টার প্রকাশ করে দেশের বাইরে মুক্তির তথ্য জানানো হয়। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির মুক্তির বিষয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দ্য অভি কথাচিত্রের কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি জানান, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ইউকে, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত, বাহরাইন, কাতার এবং ওমানে সিনেমাটির মুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে।
জংলি সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি প্রমুখ। ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে সিনেমার ‘জনম জনম’ শিরোনামের গান। প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান মাহমুদুল। গেয়েছেন তাহসান খান ও আতিয়া আনিসা। ভিডিওতে দেখা গেল সিয়াম ও দীঘির রোমান্স। সিনেমার ট্রিজার মুক্তির আগে প্রি-টিজেও দেখা গেছে এই দুজনকে। পোস্টার ছাড়া এখনো দেখা মেলেনি এ সিনেমার আরেক নায়িকা শবনম বুবলীর।
পোস্টার, গান, প্রি-টিজ দেখে ধারণা করা যায়, সিয়াম ও দীঘির মধ্যে থাকে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমিকার সঙ্গে ঘটে যাওয়া কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে বদলে যায় সিয়ামের জীবন। হয়ে ওঠে জংলি। এই কারণেই হয়তো প্রি-টিজ শেয়ার করে ফেসবুকে লেখা হয়েছে, ‘ভালো তো সবাই বাসে। কিন্তু কেউ ভালোবেসে জংলি হয় না!’সে সময় তার জীবনে আগমন হয় বুবলীর।
পর্দায় জংলি হয়ে উঠতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি সিয়াম। চরিত্রটি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে প্রায় সাত মাস চুল-দাড়ি কাটেননি তিনি। শুটিংয়ের পুরোটা সময় চরিত্রের মাঝেই যাপন করেছেন সিয়াম।
জংলির মুক্তির কথা ছিল গত কোরবানির ঈদের সময়। ঘোষণা এসেছিল গত রোজার ঈদে। তবে শেষ মুহূর্তে মুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন নির্মাতা। এম রাহিম বলেন, ‘তাড়াহুড়া করে কাজ শেষ করে কোয়ালিটির সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে চাইনি। তাই সে সময় রিলিজ দেওয়া হয়নি। আমি এবং আমার টিম চেয়েছিলাম, কোনো এক ফেস্টিভ্যালে যেন জংলি সিনেমাটি রিলিজ হয়। আমার বিশ্বাস প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখার পর সব দর্শক জংলিকে আপন করে নেবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে সম্প্রতি উচ্ছেদের শিকার হকাররা আবারও আগের জায়গায় বসার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন ভবনের ২ নম্বর কক্ষে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ ও ভুক্তভোগী হকারদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাশরুমচাষি ও ক্যাম্পাসে হকারদের কাছে মাশরুম সরবরাহকারী রুবি আক্তার। সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা জেলার আহ্বায়ক শবনম হাফিজ। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল কবির ও আঁখি মনি এবং ভাসমান উদ্যোক্তা নুরুজ্জামান কমলসহ উচ্ছেদের শিকার কয়েকজন হকার।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শবনম হাফিজ। তিনি বলেন, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক হকার কাজ করতেন। গত অক্টোবরে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে ডাকসুর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অসংখ্য হকার বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।
শবনম হাফিজ আরও বলেন, এই মানুষগুলোকে উচ্ছেদের নামে হয়রানি করা হলো, জিনিসপত্র নষ্ট করা হলো। এই ক্ষতির জবাবদিহি চাই, ক্ষতিপূরণ চাই এবং তাঁদের যেন সসম্মানে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি চাই। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেন তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেয়।
আয়োজকেরা বলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ও ভুক্তভোগী হকাররা উচ্ছেদের পর নিজেদের কার কী পরিস্থিতি ও কীভাবে তাঁদের বর্তমান জীবন চলছে, তা জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করছেন। এর আওতায় এ পর্যন্ত তাঁরা ৫০ জনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা তুলে ধরার লক্ষ্যেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে রুবি আক্তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় স্বামীর গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাহিদার ওপরই নির্ভর ছিল তাঁদের সংসার। হকার উচ্ছেদের পর সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে।
রুবি আক্তার বলেন, ‘একজন হকারের সঙ্গে আরও অনেকের আয় জড়িয়ে থাকে—সরবরাহকারী, পানিওয়ালা ও সবজিওয়ালা। একজনের আয় বন্ধ হলে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা চাই, হকারদের কাজের জায়গা আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হোক, বসতে দেওয়া হোক আগের জায়গায়। তাতে আরও অনেক পরিবার বেঁচে যাবে।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, হকার উচ্ছেদ ডাকসুর দায়িত্ব নয়। এটি মানবিক বা ন্যায়সংগত কোনো পদক্ষেপ নয়। হকারদের সম্মানজনক ব্যবসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করা সম্ভব।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায় ও অমানবিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকজন হকার নিজেদের বর্তমান সংকটের কথা জানান।
চার দফা সুপারিশঅনুষ্ঠানে আয়োজকেরা চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো উচ্ছেদ করা হকারদের আগের কাজের জায়গায় ফেরার সুযোগ দেওয়া; কিছুদিন পরপর উচ্ছেদের নামে হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং যাঁরা এই নির্যাতন করেছেন, তাঁদের বিচার করা; প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন বা নিজেদের সমবায় বা ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা এবং কয়েক দফায় ভাসমান উদ্যোক্তাদের হাঁড়িপাতিল ও অন্যান্য যে মালামাল প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গেছে, তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে।