গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দিনে-দুপুরে ডাকাতিকালে পিয়াস মজুমদার (২২) নামে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে হত্যা করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিনের যে কোনো সময়ে কোটালীপাড়া উপজেলার লাকিরপাড় গ্রামের পল মজুমদার খোকনের বাড়িতে ডাকাতি করা হয়।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাড়ির মালিক পল মজুমদার খোকন জানান, তিনি পেশায় দন্তচিকিৎসক ও তার স্ত্রী অনিতা বৈদ্য নার্স। প্রতিদিনের মতো আজও সকালে তারা দুজন কর্মস্থলে চলে যান। দুপুরের দিকে তাদের ছেলে পিয়াস ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিলেন না। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বাড়িতে এসে ছেলেকে ডেকে না পেয়ে দরজা খুলে দেখেন বাড়ির সমস্ত মালামাল এলোমেলো করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা। পরে ছেলে পিয়াস মজুমদারকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় খাটের উপর দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পিয়াস মজুমদারকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পিয়াসকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা 

কুমারখালীতে ২ এএসআই হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার 

তিনি আরো বলেন, ডাকাতরা পিয়াস মজুমদারের হাত-পা বেঁধে হত্যা করে টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।

পল মজুমদার খোকনের প্রতিবেশী সলমন মজুমদার বলেন, ‘‘পল মজুমদার খোকনের চিৎকার শুনে আমরা এই বাড়িতে এসে পিয়াস মজুমদারের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখে দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠাই। খোকন মজুমদারের ঘরের সকল আসবাবপত্র ভাঙা এবং এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেই।’’

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

ঢাকা/বাদল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ