ঢাকাস্থ ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোসাইটি’র ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার রাজধানীর আশকোনা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এ মাহফিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন মাস্টার। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনের প্রয়াত তিন সদস্য বীর মুক্তিযুদ্ধা সুবেদার আব্দুল মতিন (কসবা), আবু কাউছার (কসবা) ও আব্দূস সামাদ (নবীনগর) এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়েছে। ইফতার মাহফিল পরিচালনা করেন বাইতুস সালাম জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি আনিসুর রহমান নূর সালেহী। 

সোসাইটির সভাপতি মো.

জসিম উদ্দিন মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক- মো. সোহরাবুর রহমান বক্তব্যে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোসাইটি একটি সামাজিক সংগঠন। দক্ষিণখান ও বিমানবন্দর, এই দুই থানায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যারা বসবাস করেন, তাদের নিয়েই এই সংগঠনের জন্ম। এ সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ভবিষ্যতে সংগঠনের যেসব সদস্য নিম্ন আয়ের, দরিদ্র-তাদের সন্তানদের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে। সামনেই ঈদ, ঈদকে ঘিরে সদস্যদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী ও দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সবমিলিয়ে এই সংগঠনের ছায়াতলে থেকে একে অপরের বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করি। ইফতার মাহফিল সেই আয়োজনেরই অংশ। তিনি জানান, একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও টাওয়ার তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাজী শাহাব উদ্দিন (সাগর), আব্দুস সালাম ডিলার, জাকিয়া সুলতানা পান্না, শাহে আলম, শাহাদৎ হোসেন মৃধা, কাজী ইকবাল হোসেন, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মোসলেম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট শামীম আল মামুন শামীম, সাদেক হোসেন ভুইয়া রিপন ও মনতাজ উদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি শামীম চৌধুরী, সহ সভাপতি আশরাফুল ইসলাম শরীফ, কোষাধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান বাবু, ফোরকানুর রহমান রণি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন, মোমিনুর রহমান আগুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, আজিম উদ্দিন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ব র হ মণব র রহম ন স গঠন র স স ইট অন ষ ঠ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতে গতি আসবে না

শ্রম আইন এবং শ্রমিক সংগঠন গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ইস্যুর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি আগামী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশেরও উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতেও গতি ফিরবে না। আর জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পিছিয়ে দিতে জাতিসংঘে আবেদনের জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আজ সোমবার দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস আয়োজিত অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন ব্যবসায়ীরা। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। সেমিনারে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা তাঁদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

সেমিনারে বাংলাদেশ থাই চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘শ্রম আইন এবং শ্রমিক সংগঠন গঠনের বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কেন? তিন মাস পরই নির্বাচিত সরকার আসবে, এ বিষয়ে নির্বাচিত সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেন। এখন আমরা অর্থনৈতিক অনেক সংস্কারের কথা বলছি। কিন্তু কিচ্ছু হচ্ছে না। কোনো মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) অথবা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) হচ্ছে না।’

নিট পোশাকশিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের যে অবস্থা, তাতে এখনই এলডিসি উত্তরণের পরিস্থিতি নেই। এরই মধ্যে আমরা ১৬টি ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, প্রয়োজনে জাতিসংঘ এসে আমাদের পরিস্থিতি তদন্ত করে দেখুক। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হোক।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘এখন আমাদের নির্বাচিত সরকার দরকার। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর মানুষ জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না পেলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে না।’

সিরামিকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, সুশাসন ছাড়া কোনো দেশের ও ব্যবসা–বাণিজ্য পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না। ক্রেতারা এখন আতঙ্কিত, তারা পণ্য কিনতে চায় না। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র সমাধান নির্বাচন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যবসা সহজ করার পরিবেশ ৯৯ শতাংশ খারাপ ছিল। এখন সেটা হয়তো ৯৫ শতাংশে এসেছে। ধীরে ধীরে এটা ৯০ শতাংশ হবে এবং আরও উন্নতি হবে। কেন এটা হয় না, সেটা নিয়ে আলোচনা দরকার। বর্তমান সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করেছে। এতে দুই মাসে প্রায় ১২ লাখ সরাসরি সাক্ষাৎ কমেছে। অর্থাৎ ১২ লাখ বার এনবিআর এ কাগজ নিয়ে আসতে হয়নি।’ বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহীর, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান-উজ জামান, আকিজ বশির গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম প্রমুখ।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আপনারা বেপরোয়া (ডেসপারেট) হচ্ছেন। কিন্তু যে দেশের বিমানবন্দর আগুনে পোড়ে, সেখানে কে বিনিয়োগ করবে? দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নেই।’

ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর বলেন, ব্যাংক খাতে বিগত সরকারের সময়ের মতো অবস্থা চলতে থাকলে খাতটিকে দুই বছরের বেশি টিকে থাকতে পারত না। বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের মামলা নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে আনতে হবে। তা না হলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ