গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে হোটেল হ্যাভেন ফ্রেশে অভিযান চালিয়ে আট নারীসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হোটেলটিতে ভাঙচুর চালানোর পর আসবাবপত্র ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে হোটেলটিতে অভিযান চালায় পুলিশ। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ওসি মো.

নজরুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হোটেল হ্যাভেন ফ্রেশ থেকে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আট নারীসহ ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

পল্লবী থানায় ঢুকে যুবকের হামলা, ওসিসহ আহত ৩

চট্টগ্রামে হেলমেট চোরে অতিষ্ঠ বাইকাররা, গ্রেপ্তার ২

এলাকাবাসী জানান, পুলিশের অভিযানের পর বিক্ষুব্দ জনতা হোটেলটিতে ভাঙচুর চালায়। তারা হোটেলটির আসবাবপত্র ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর এনে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় তারা হোটেল বন্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আশরাফ নামে এক দোকানি বলেন, ‍“কয়েকদিন পরে ঈদ। আমরা ঈদকে সামনে রেখে নতুন মালামাল উঠিয়েছি। আজকে যদি বিক্ষুব্ধ জনতা দোকানে আগুন ধরিয়ে দিতেন তাহলে আমাদের পথে বসতে হতো। আমরা চাই কোনাবাড়ী থেকে আবাসিক হোটেল আজীবনের জন্য বন্ধ করা হোক।” 

কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন,  “আমরা অভিযান শেষে থানায় ফেরার পর শুনি, হোটেলে কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়েছে। তাৎক্ষণিক কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর আগেও হোটেলটিতে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোটেল হ্যাভেন ফ্রেশে অভিযান চালিয়ে ২ নারীসহ ১৬ জনকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক আগ ন আসব বপত র ন র সহ

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ