পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি অন্তত ১৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। উদ্ধারকারীদের হাতে গোষ্ঠীটির অন্তত ২৭ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, সব সদস্যকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে গতকাল মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। ওই সময় ট্রেনটিতে থাকা ৯টি বগিতে ৪ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। কতজন সশস্ত্র ব্যক্তি ট্রেনটিতে হামলা চালান, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাকি জিম্মিদের উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চালবে। এর আগে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি থেকে উদ্ধার করা ৫৭ যাত্রীকে আজ বুধবার দিনের শুরুর দিকে কোয়েটায় আনা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় মাচ শহরে আছেন।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, গতকাল উদ্ধার অভিযান শুরুর পরপর সশস্ত্র ব্যক্তিরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। ১৭ জন আহত যাত্রীকে জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাহিনীর সূত্র বলছে, সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে ‘বিদেশি সহায়তাকারীদের’ সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের মধ্যে আফগানিস্তানে থাকা একজন ‘মাস্টারমাইন্ড’ রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা ট্রেনে থাকা নারী ও শিশুদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ কারণে অভিযানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনপাকিস্তানে সেই ট্রেন থেকে ৮০ জিম্মি উদ্ধার, সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৩ সদস্য নিহত৬ ঘণ্টা আগে

সশস্ত্র ব্যক্তিরা রেললাইনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেনটি থামান। এ সময় তাঁরা ট্রেনটির চালকের কক্ষে গুলি চালান। এতে চালক আহত হন। দুর্গম আফগান-ইরান সীমান্তের পাশে পার্বত্য অঞ্চলে থাকা একটি সুড়ঙ্গে প্রবেশের আগমুহূর্তে ট্রেনটি থামানো হয়।

এই ঘটনায় বেলুচিস্তান সরকার জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংগঠিত করা হয়েছে বলে জানান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ।

ঘটনাস্থলে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ও নিরাপত্তা বাহিনীর দল পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সিবি ও কোয়েটা শহরের বেসামরিক হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব শহরের বেসামরিক হাসপাতালগুলোয় কয়েকটি ওয়ার্ড খালি করে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় কোয়েটা রেলস্টেশনে একটি জরুরি তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।

যাত্রীবাহী ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, এই পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো এটাই প্রমাণ করে যে ওই সশস্ত্র ব্যক্তিদের ইসলাম, পাকিস্তান ও বেলুচিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুনপাকিস্তানে বোমা ফাটিয়ে ও গুলি চালিয়ে ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিল সশস্ত্র গোষ্ঠী১৮ ঘণ্টা আগে

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ধাপুর, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) প্রেসিডেন্ট আমাল ওয়ালি খান।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। চিন্তক প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (পিআইসিএসএস) তথ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা আগের মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে।

আরও পড়ুনপাকিস্তানে ট্রেনে হামলার পর ১৮২ জনকে জিম্মি, দাবি না মানলে সবাইকে হত্যার হুমকি১৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সশস ত র গ ষ ঠ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সনাহাদির উপরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে শহরে যুবদলের মিছিল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমদের নেতৃত্বে শহরে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করেছে মহানগর যুবদল।

‎শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় শহরের খানপুর হাসপাতাল রোড় থেকে শহরে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করে মহানগর যুবদল। মিছিলটি খানপুর থেকে শুরু করে মেট্রোহলের মোড় হয়ে মিশন পাড়া হোসিয়ারি সমিতির সামনে এসে মহানগর বিএনপির মূল মিছিলের সাথে অংশগ্রহণ করেন।

‎এময়ে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহর উপরে হত্যাচেষ্টার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং জড়িত দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দেয়।

‎নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমল, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান খলিল শ্যামল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, শহিদুল ইসলাম, ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, পারভেজ খান, আরমান হোসেন, কামরুল ইসলাম রনি, মিনহাজ মিঠু, আশিকুর রহমান অনি, জুয়েল রানা, কামরুল হাসান মাসুদ, ফয়েজ উল্লাহ সজল,আলী ইমরান শামীম, তরিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম আপন, শাহীন শরীফ, মাগফুর ইসলাম পাপন, জুনায়েদ আলম ঝলক, ফয়সাল আহমেদ, সাইদুর হাসান রিপন, আরিফ খান, কায়সার আহমেদ, এড. শাহিন খান, কাজী নাইসুল ইসলাম সাদ্দাম, আলী হোসেন সৌরভ, বাদশা মিয়া, মাসুদ রানা, মাকসুদুর রহমান শাকিল, রুবেল সরদার, রিয়াজুল আলম ইমন, জুনায়েদ মোল্লা জনি, হাবিবুর রহমান মাসুদ, আঃ কাদির, আশরাফুল হক তান্না, জাহিদুল হাসান শুভ, মাহফুজুর রহমান ফয়সাল প্রমুখ ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ