কোটা না মেনে এ কী বিপদে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল
Published: 12th, March 2025 GMT
নিয়ম না মানার শাস্তি কড়ায়-গন্ডায় পেল দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেট দল ওয়ারিয়র্স। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলের জন্য যেমন বর্ণ কোটা রয়েছে, দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটেও আছে তেমনই কোটা। সেই কোটার নিয়ম ভঙ্গ করে একাদশ সাজিয়ে বিপদে পড়েছে ওয়ারিয়র্স। দেশটির শীর্ষ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট ওয়ান ডে কাপের প্লে-অফে উঠে গিয়েছিল দলটি। কোটার নিয়ম ভাঙায় পয়েন্ট কাটা পড়ায় এখন আর প্লে-অফ খেলতে পারছে না ওয়ারিয়র্স।
ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখে ডলফিনসের বিপক্ষে ম্যাচটিই বিপদে ফেলেছে ওয়ারিয়র্সকে। ১২৬ রানে ডলফিনসকে হারানো দলটি লিগ পর্ব শেষ করেছিল তিনে থেকে। তবে শাস্তি হিসেবে ৫ পয়েন্ট কাটা যাওয়ায় দলটি নেমে গেছে চারে। পয়েন্ট তালিকায় দলটিকে টপকে গেছে টাইটানস। এই টুর্নামেন্টে প্রথম তিনটি দল প্লে-অফ খেলার সুযোগ পায়।
ডলফিনসের বিপক্ষে ম্যাচটিতে মাত্র দুজন কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান খেলোয়াড় রাখাতেই শাস্তি পেতে হলো ওয়ারিয়র্সকে। নিয়মানুযায়ী কমপক্ষে তিনজন কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান খেলোয়াড় একাদশে রাখা বাধ্যতামূলক। তবে পরিস্থিতির কারণে কোটা পূরণ করতে অপারগ হলে আগেভাগে তা বোর্ডকে জানালে অনুমতি পাওয়া যায়। ওয়ারিয়র্স সেই কাজ না করে বিপদে পড়েছে।
ওয়ারিয়র্সের সর্বনাশে পৌষ মাস পেয়েছে ডলফিনস.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।
এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।