ফটিকছড়িতে থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের তৎপরতা। অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে এবং কারাদণ্ড দিলেও থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় দেদার চলছে মাটি কাটার কার্যক্রম। কৃষকের ফসলি জমির উপরিভাগ, খালের চর, খাসজমি ও টিলা-পাহাড় তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। বাদ যাচ্ছে না হালদা নদীর বেড়িবাঁধও। 
মাটি কাটার অপরাধে গত বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মো.

ইয়াকুর ও শাহাদাত হোসেন নামে দুই ব্যক্তিকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন। এর পরও বন্ধ হয়নি অবৈধ এ কার্যক্রম। উপজেলার নারায়ণহাট গরু বাজারের পাশে খাসজমি থেকে রাতে এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী ইটভাটা ও দি ডেইরি-পোলট্রি ফার্মে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এমরান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। 

স্থানীয়রা জানান, এমরান আগেও একইভাবে মাটি কাটতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তার দৌরাত্ম্য কমেনি। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক অভিযানে জরিমানা করা হলেও তাকে থামানো যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির কিছু নেতার আশীর্বাদে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। 
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গহিরা-হেঁয়াকো সড়কের পাশে নারায়ণহাট গরু বাজারের কাছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে রাতে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত বিশাল জমির মাটি কাটা হচ্ছে। প্রায় ৫-৭ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ইটভাটা, কারখানা ও ভিটা ভরাট করার কাজে। সেখানে একসঙ্গে একাধিক ডাম্প ট্রাক ও এক্সক্যাভেটর কাজ করছে। এতে পাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন শত শত একর ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। 

ডাম্প ট্রাক চালক মো. ইউসুফ বলেন, প্রতি গাড়ি ৮৫০ টাকায় পাশের ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছি। কে কী বলল, তা আমার দেখার বিষয় নয়। এসব মাটির কারবারি এমরান নিজেই দেখাশোনা করেন। আমাদের কেউ বাধা দেয়নি বা আপত্তিও করেনি। 
স্থানীয়রা বলছেন, মাটিখেকো এমরান সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর তিনিও দলীয় পরিচয় পাল্টেছেন। স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবছার ও বালু জাফরের ছত্রছায়ায় এমরান আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। 
মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে এমরান বলেন, ‘আমি মাটি কাটিনি। মাটি কাটার জন্য গাড়ি সরবরাহ করেছি। মাটি কেটেছে বিএনপির আবছার।’ 
অন্যদিকে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবছার বলেন, ‘আমি মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত নই। মূলত মাটি কাটে এমরান। আমি আমার দলীয় কর্মীদের জন্য কিছু খরচ চেয়েছি মাত্র।’ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহির আজম চৌধুরী বলেন, কেউ যদি দলের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ কোনো কাজে জড়িত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
নারায়ণহাট ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহকারী কর্মকর্তা শেখ শরফুদ্দিন খান সাদী বলেন, জায়গাটি পরিদর্শন করে মাটি কাটার সত্যতা পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বালু ও মাটি পাচার রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত আছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম উপজ ল এমর ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ