বিনা মূল্যে নৌকা না পেয়ে কর্মচারীকে মারধর করার অভিযোগ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে
Published: 16th, March 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় বেড়ানোর জন্য বিনা মূল্যে নৌকা না পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) নাছির উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।
কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর ঘাটে গতকাল শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নৌকা চলাচল বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান মাঝিসহ সহকারী কমিশনার কার্যালয়ের কর্মচারীরা। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় বিষয়টির মীমাংসা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার বলেন, এ ঘটনায় ওনারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি সমাধান হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জাবেদ আহমেদ বলেন, গতকাল দুপুরে ওই পুলিশ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন সাদাপাথর ঘাটে যান। বর্তমানে সেখানে খাস কালেকশন নিয়ন্ত্রণ করছে ইউএনও কার্যালয়। গতকাল দুপুরে ঘাটে খাস কালেকশনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি (জাবেদ)। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাদাপাথর যাওয়ার জন্য নৌকা চান। তিনি বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করতে হবে বলে জানান। তখন হঠাৎ ওই পুলিশ কর্মকর্তা তেড়ে এসে চড়থাপ্পড় মারেন। পরে ঘাট থেকে একটি নৌকা নিয়ে তিনি সাদাপাথর চলে যান।
কোম্পানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাছনাত বলেন, নৌকার ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য একেক দিন একেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নৌকার সাদাপাথর যাওয়া আসার জন্য ৮০০ টাকা ভাড়া নির্ধারিত। এর মধ্যে নৌকার মাঝি ও উপজেলার খাস কালেকশনের টাকা। সরকারি কোনো কর্মকর্তা সেখানে গেলে নৌকা নিতে হলে নিয়ম অনুযায়ী ইউএনওকে জানাতে হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ স ক ল কশন কর মকর ত র জন য সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।