খুলনার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হায়দারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
Published: 17th, March 2025 GMT
সরকারি জমি বিক্রি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খুলনার দিঘলিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হায়দার মোড়লের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যদের আগামী ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ইউএনও মো.
এর আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়লের অপসারণের দাবিতে খুলনার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার অপসারণের দাবিতে ইউনিয়নের এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
আরো পড়ুন:
ওড়না ও নেকাব কাণ্ডের মধ্যে ঢাবিতে নতুন সিদ্ধান্ত
সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি
ইউএনও’র কার্যালয়ের সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার মোড়লের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কিশোর আহমেদকে। সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোহাগ হোসেন ও সদস্য করা হয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধাকে।
ইউএনও মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।”
এলাকাবাসী ইউপি চেয়ারম্যানের অপসরণ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। এতে উল্লেখ করা হয়, দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হায়দার আলী মোড়লের বিরুদ্ধে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমির পজিশন বিক্রি করে মোটা অঙের অর্থ আদায়, আশ্রায়ণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাত, টিআর-কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয়-ছয় করে অর্থ আত্মসাত, গভীর নলকূপের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এলজি এসপি প্রকল্প, হাট বাজার, উন্নয়ন তহবিল, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ ও কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে টিআর-কাবিটা প্রকল্পে পুরাতন ইট ব্যবহার করে ও ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে কাজ জোড়া-তালি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তিনি শেখ পরিবারের কাছ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন দিয়ে বহু ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালালেও আওয়ামী লীগের দোসর আলোচিত এই ইউপি চেয়ারম্যান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত প রকল প উপজ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।