সারা দেশের মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় ১ হাজার ৪০০ জনের একটি তালিকা করেছে হাইওয়ে পুলিশ। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২০ বছরে মহাসড়কে ডাকাতির বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা এ তালিকায় রয়েছেন। তালিকায় থাকা প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশন) শফিকুল ইসলাম।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন শফিকুল ইসলাম। ‘ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, নগরজুড়ে ছিনতাই, সড়ক দুর্ঘটনার শঙ্কা উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই সভায় মহাসড়কে ডাকাতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যাতে বুঝতে পারে, পুলিশ ডাকাত খুঁজছে। তখন তারা সতর্ক হবে।’

সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ একা কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না বলে উল্লেখ করেন ডিআইজি শফিকুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বিতভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

সারা দেশের মহাসড়কে ১৩৯টি হাটবাজার আছে জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এগুলো উচ্ছেদ করবে। কিন্তু পুলিশ কি একাই পারবে এসব উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে? এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সভায় ধারণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো.

মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন চলাচল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, মোটরসাইকেলের যাত্রী ও আরোহীর মানসম্মত হেলমেট নিশ্চিতকরণ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের ভিজিলেন্স টিমে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত, ঈদের ১০ দিন আগে মহাসড়ক থেকে সব ধরনের অটোরিকশা উচ্ছেদসহ সাতটি দাবি উপস্থাপন করা হয়।

উড়ালসড়ক থেকে নামলেই যানজটে পড়তে হয় উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মুহাম্মদ জকরিয়া বলেন, এগুলোর পরিকল্পনা থেকে অনুমোদনে যাঁরা জড়িত, তাঁদের কোনো পানিশমেন্ট (শাস্তি) হয় না। এসব বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি। ঢাকায় যেসব উড়ালসড়ক তৈরি হয়েছে, তার বেশির ভাগ অপরিকল্পিত।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, কোন ধরনের যান সড়কে চলবে, এ বিষয়ে একটা নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। কোনো সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণও নেই, ফলে যে যার মতো পরিবহন আমদানি করছে।

সাইফুল আলম আরও বলেন, ভাঙা রাস্তায় দুর্ঘটনা হলে দোষ হয় চালকের। অথচ চালকের দেখার সুযোগ ছিল না, রাস্তাটা ভাঙা নাকি ভালো। এ বিষয়ে সব মহলের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

দেশে অযাচিত দুর্ঘটনা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স বলেন, বর্তমানে মোটরসাইকেলের অপর নাম ‘অ্যাকসিডেন্ট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা একটু জায়গা পেলেই দ্রুত যেতে চান। ফলে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ