পণ করেছি, আর কর অব্যাহতি দেব না: এনবিআর চেয়ারম্যান
Published: 17th, March 2025 GMT
কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার কথা আবারও জানালেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমরা পণ করেছি যে আর কর অব্যাহতি দেব না। কর অব্যাহতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।’
আজ সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআর কার্যালয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিবি), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় সংস্থাটির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে কর অব্যাহতির দাবি জানানো হলে এনবিআর চেয়ারম্যান তখন বলেন, ‘সারা জীবনই তো কর অব্যাহতি দিলাম। ফল তো আসে না। সবকিছুর আগে কেন কর অবকাশ লাগবে? কর অব্যাহতির সংস্কৃতিতে আর থাকতে চাই না। আমাদের বদনাম হয়ে গেছে যে রাজস্ব যা আদায় করি-এর সমপরিমাণ অব্যাহতি দিয়ে দিই।’
১৫ থেকে ২০ বছর ধরে পুঁজিবাজারে যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা ৭ থেকে ১৫ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন, এমন মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এযাবৎ পুঁজিবাজারে যত সুবিধা দেওয়া হয়েছে, বাজারে তার সুবিধা পাওয়া যায়নি।
এনবিআর ২০২৩-২৪ সময়ে শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়ে তিনটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে এনবিআর। প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় উঠে আসে—আয়কর, ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও আবগারি শুল্ক মিলিয়ে এক অর্থবছরে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪১০ কোটি টাকার ছাড় দেওয়া হয়েছে।
দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর কমানো ও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা এবং তালিকাভুক্ত বন্ড থেকে অর্জিত আয় বা সুদের ওপর কর অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়।
এ ছাড়া লভ্যাংশ করের ওপর দ্বৈত করের বিধান প্রত্যাহার করে লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত করা, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান কোনো ধরনের শর্ত ছাড়া ১০ শতাংশ করা, নির্ধারিত বার্ষিক মোট নগদ ব্যয় ও বিনিয়োগের সীমা ৩৬ লাখ টাকার বদলে মোট ব্যবসায়িক লেনদেনের (টার্নওভার) ১০ শতাংশ করা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের (এসএমই) প্রতিষ্ঠান ও অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের (এডিবি) তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেওয়া এবং ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেয় স্টক এক্সচেঞ্জ।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) মূলধনি আয়ের ওপর করহার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়। এবিবি ভ্যাট সফটওয়্যারের বাস্তবায়ন, ঋণ হিসাব ও ক্রেডিট কার্ড হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানায়। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের হার কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করে।
স্বাস্থ্যবিমার ওপর কর কর্তন রহিত করা এবং অনলাইনভিত্তিক বিমা প্রিমিয়ামের ওপর ভ্যাট ও করপোরেট কর বাতিলের প্রস্তাব জানায় বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ)।
এনবিআর চেয়ারম্যান বিমা খাত নিয়ে বলেন, উন্নত দেশের মতো বিমা কোম্পানিগুলোর ‘হেলথ কার্ডে’র প্রচলন করতে হবে। স্বাস্থ্যবিমা ভালোভাবে দিতে পারলে হুমড়ি খেয়ে পড়বে দেশের মানুষ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ওপর কর
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের
বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।
আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।
স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম