রাত পোহালেই যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এর ফলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে রেল যোগাযোগ আরো সহজ হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫০টি পিলার আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে নির্মিত এই সেতুটি পার হতে ট্রেনের ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিনিট সময় লাগবে। 

রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আবু ফাত্তাহ মো.

মাসুদুর রহমান বলেন, “নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল লেনের রেল লাইন তৈরি করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।”

এদিকে, সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে রেলপথ বিভাগ। যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনিচি থাকবেন বলেও জানা গেছে। 

আরো পড়ুন:

যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন মঙ্গলবার, পার হতে লাগবে সাড়ে ৩ মিনিট

দুর্ভোগের কেন্দ্রবিন্দু ফরিদপুরের বেইলি ব্রিজ

উদ্বোধনী কর্মসূচির মধ্যে যমুনা রেল সেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকাল ১১টা ২০ মিনিটে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তে সয়দাবাদ রেল স্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা যমুনা রেল সেতু পার হবেন। ১১টা ৪০ মিনিটে সয়দাবাদ রেল স্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। দুপুর ১২টায় ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফেরত যাবেন।

রেলওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, “যমুনা রেল সেতু দিয়ে ট্রেন পারাপারে আগের তুলনায় কম সময় লাগবে। ফলে দুই পাড়েই সময় সাশ্রয় হবে। ডাবল লেনের সুবিধা পেতে হলে আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে।”

বাংলাদেশ রেলওয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ার তানভীরুল ইসলাম বলেন, “রেল সেতুতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে রেল সেতুতে পরবর্তী সময়ে রং করার প্রয়োজন হবে না। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ সেতুটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।”

সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, “সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। উদ্বোধনের দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে সেতু নিয়ে ৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এতে সময় লাগবে সাড়ে ৩ মিনিট। আগে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পাড়ি দিতে সময় লাগতো ২০ মিনিট।” 

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প সময় ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ