বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় মাপা ‘অনেক বড় অবিচার’ বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ইসলামি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায়, আর আওয়ামী লীগ আগাগোড়া আবু জাহেলের ভূমিকায়।

বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামিক শক্তির সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন মামুনুল হক। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রদল আয়োজিত ‘হিফযুল কোরআন ও কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতার’ চূড়ান্ত পর্বের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তবে এই দুটির মধ্যে ঐতিহাসিক অনেক ব্যবধান রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মামুনুল হক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কেউই ইসলামি রাজনীতি করে না বরং তাদের রাজনীতির ভিন্ন দর্শন রয়েছে। ঠিক যেমন আবু জাহেল এবং আবু তালেব—কেউই ইসলামের অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল ও আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপে, তার চেয়ে বড় জাহেল আর কেউ হতে পারে না।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে হিজবুল বাহার জাহাজে গিয়েছিলেন। সেখানে মেধার প্রতিযোগিতা হয়েছিল। পরে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সব বোর্ডের প্রথম ও দ্বিতীয় হওয়া শিক্ষার্থীদের বিদেশে নিয়ে যেতেন, জাতিসংঘের অধিবেশনে নিয়ে যেতেন। মেয়েদের উপবৃত্তি দিয়েছেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছাত্ররাজনীতি আমাদের সমাজকে কলুষিত করেছিল। আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছিল। পাঁচ তারিখের পর জাতীয় রাজনীতি ও নেতৃত্বে পরিবর্তন এসেছে।’

বিএনপির আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন‌ নবী খান বলেন, ‘ছাত্রদল মেধাবীদের সংগঠন। আজকে আমরা কোরআন তিলাওয়াত শুনলাম। আমাদের ছোট্ট ছোট্ট ভাই-বোনেরা কত সুন্দর করে তিলাওয়াত করল। ছাত্রদল যেন এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখে।’

দলটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন বলেন, ছাত্রদলকে এই কোরআন তিলাওয়াত আয়োজন করার কথা বলেছিলেন তারেক রহমান। এটা এই ক্যাম্পাসে প্রথম। এর আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এই ধরনের আয়োজন করতে দেননি।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের দায় রয়েছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমাদের আশা থাকবে, আগামীতে যারাই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন তাঁরা মাদ্রাসা শিক্ষারর্থীদের প্রতি বিশেষ নজর রাখবেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক ছ ত রদল র জন ত আম দ র আওয় ম ইসল ম ক রআন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত

মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির। 

আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ