দিনে কেউ অটোরিকশাচালক-ফল বিক্রেতা, রাতে ডাকাত
Published: 18th, March 2025 GMT
আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকায় ৯ মার্চ ব্যবসায়ী দিলীপ দাসকে কুপিয়ে হত্যা ও স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া লুণ্ঠিত ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার, স্বর্ণ বিক্রির ৭৬ হাজার টাকা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আশুলিয়া থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো.
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার পিটুয়া বন্দেরবাড়ি গ্রামের রিপন মিয়া, পাবনা জেলার সুজানগর থানার চর ভবানীপুর শেখপাড়া গ্রামের আরিফ প্রামাণিক, একই জেলার আতাইকুলা থানার সরাডাঙ্গী (সরদারপাড়া) গ্রামের শাহ আলম, আরমান শেখ, রাজশাহী জেলার কর্ণহার গ্রামের রাধানগর শল্লাপাড়া মোড় এলাকার ইব্রাহিম বাবু ও কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার বৃষ্টিপুর গ্রামের মাসুদ রানা।
পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। এদের মধ্যে কেউ দিনের বেলায় অটোরিকশা চালায়, কেউ ফলের ব্যবসা করে। এসব পেশার ফাঁকে তারা বিভিন্ন এলাকায় রেকি করে রাতে ডাকাতি করত। এদের মধ্যে ৫ ডাকাত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে হত্যা ও স্বর্ণ লুট করে। একজন ডাকাতির মালপত্র নিজের জিম্মায় রাখে। গ্রেপ্তার ইমরান, তার দুই ভাই শাহ আলম ও আরমান, রিপন, আরিফ, আকাশ, তালিম ও মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ ঘটনার দিন প্রাইভেট কার ভাড়া করে নয়ারহাট এলাকায় স্বর্ণের দোকান লুট করতে যায়। এর মধ্যে ঘটনার সময় ইমরান ও আকাশ গাড়ির ভেতরে ছিল। আরমান ও শাহ আলম ঘটনাস্থলের পাশে পাহারা দেয় এবং তালিম ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। রিপন ও আরিফ চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী সরস্বতী দাসের সামনেই ব্যবসায়ী দিলীপকে খুন করে। মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ স্বর্ণের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে ভাড়া করা গাড়িতেই ৮ ডাকাত পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রিপনকে সাভারের যাদুরচর এলাকা থেকে এবং মাসুদ রানা, শাহ আলম ও আরমানকে আশুলিয়ার বারইপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যে আরিফকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতির স্বর্ণ ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয় রাজশাহীর কর্ণহাট এলাকা থেকে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে লুট করা ৫ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে আরমানের ফলের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাপাতি। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল টপ ট গ র প ত র কর শ হ আলম স বর ণ আরম ন
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।