কিশোরগঞ্জে ভাঙারি দোকানে মর্টার শেল দেখে ৯৯৯-এ কল, পরে উদ্ধার
Published: 19th, March 2025 GMT
লোহার দণ্ড ভেবে ভাঙারি দোকানে অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে রাখা ছিল একটি মর্টার শেল। জিনিস সরাতে গিয়ে হঠাৎ দোকানদারের নজরে পড়ে ব্যতিক্রম দণ্ডটি। বোমা বলে সন্দেহ হলে মুহূর্তেই তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে বিষয়টি জানান।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মর্টার শেলটি শনাক্ত ও উদ্ধার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের একরামপুর এলাকার ‘টুটুল এন্টারপ্রাইজ’ নামের ভাঙারির একটি দোকানে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে মালিক টুটুল মিয়া দোকানের ভেতরে প্রথমে মর্টার শেলটি দেখতে পান। অস্বাভাবিক বস্তুটি দেখতে পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মর্টার শেলটি শনাক্ত করে এবং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা চায়। সেনাবাহিনীর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আনুমানিক রাত সোয়া ১টার দিকে মর্টার শেলটি বালতির ভেতর বালু চাপা দিয়ে নিরাপদে সংরক্ষণ করে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) টুটুল উদ্দিন আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ভাঙারি দোকানটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট আসছে। তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মর্টার শেলটি ধ্বংস বা এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।