সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার মৃত্যু, বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
Published: 20th, March 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার মৃত্যুর পর দলটি স্থানীয় দুই নেতার পদ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা বিএনপি।
পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির (জনি সাইদুল) ও সাবেক সদস্যসচিব মঞ্জু রহমান (মঞ্জু শিকদার)। গতকাল বুধবার রাতে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদের সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এনায়েতপুরে বালুমহাল ও ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা কবির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে নাম আসায় থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির জনি ও সাবেক সদস্যসচিব মঞ্জু রহমানের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ স্থগিত করা হলো। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলো। তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মকবুল হোসেন, সহসভাপতি নাজমুল হাসান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর কায়েম।
গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজনের কথা ছিল। একে কেন্দ্র করে দলটির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে গতকাল রাত আটটার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবির হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এই সংঘর্ষের ঘটনায় আমি জড়িত নই। তবু আমাকে পদ স্থগিতের চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এটি আমার ওপর চরম অন্যায় করা হয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য কবিরের লাশ সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানি। তিনি বলেন, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে কবিরের লাশ ঢাকা থেকে এনায়েতপুর থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ছ ত রদল স ঘর ষ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ