ঈদের সিনেমার প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে কবেই। নেই প্রচারণার ধারাবাহিকতায় আজ প্রকাশিত হলো জংলি সিনেমার নতুন গান 'বন্ধুগো শোনো'। টিজারের মত গানটিও দারুণ হয়েছে বলেছেন দর্শক শ্রোতারা। ইমরান ও কনার শ্রুতিমধুর গায়কীর পাশাপাশি গানের লোকেশন  ও সিয়াম-বুবলীর পারফর্মন্সের দারুণ প্রশংসা করেছেন। 

জংলি ছবির সবগুলো গানই নন্দিত গীতিকবি ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদের।  একই সঙ্গে মোলো-রোমান্টিক এই গানটির সুর ও সংগীত প্রযোজনাও তার।  গানটি প্রকাশের পর সংগীতপ্রেমীরা ক্রমাগত গানটি শোনার পাশাপাশি নিজেদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা শুরু করেছেন। সেই প্রতিক্রিয়ায় গানের ¯সুর স্রষ্ঠা প্রিন্স মাহমুদের অনবদ্য সৃষ্টির পাশাপাশি উঠে আসছে শিল্পী ইমরান মাহমুদুল ও দিলশাদ নাহার কনার গায়কীর প্রশংসা। তারপরও এ আয়োজন নিয়ে প্রিন্স মাহমুদের কথায় নেই কোনো বাহুল্য। 

স্বল্পভাষী এই সুরকার শুধু একটুকুই বলেছেন, ‘অভিনেতা সিয়াম, পরিচালক রাহিম থেকে শুরু করে ‘জংলি’ টিমের অনেকের চাওয়া ছিল, এবার যেন, নব্বই দশকের সিনেমার মিষ্টি সুরের নিটোল প্রেমের গানগুলোর মত একটা ডুয়েট গান তৈরি করি। তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণে আমার মত করে ‘বন্ধুগো শোনো’ গানটি তৈরি করেছি। আশা করছি, গানটি ভালো লাগবে।’

শিল্পী ইমরানের কথায়, “বন্ধু গো শোনো’’ এমন একটি গান, যা শ্রোতাদের মুগ্ধতার আবেশে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবে ।’ 

শিল্পী দিলশাদ নাহার কনা বলেন, সময়কে ছাপিয়ে যাওয়ার মতো আরকেটি অসম্ভব সুদার গান ‘বন্ধুগো শোনো’। যার ¯্রষ্ঠা প্রিন্স মাহমুদ। তার পক্ষেই এমন অনবদ্য আয়োজন সম্ভব, যা শ্রোতা মনে দীর্ঘদিন অনুরণন তুলে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’ 

প্রসঙ্গত, ‘জংলি’ সিনেমার জন্য মোট চারটি গান তৈরি করেছেন প্রিন্স মাহমুদ। এটি প্রথম কোনো সিনেমা যার সব গানের সুর তার করা। এর আগে প্রকাশিত হয়েছে ‘জংলি’ সিনেমার প্রথম গান ‘জনম জনম’। দ্বৈত এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসান খান ও আতিয়া আনিসা। এই গানটিও অল্প সময়ের ব্যবধানে শ্রোতাদের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ