নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদ তৈরি করেছিল ওসমান পরিবার : মুন্না
Published: 21st, March 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ওসমান পরিবারের সমালোচনা করে বলেন, নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদে তৈরি করেছিল ওসমান পরিবার। এই ওসমান পরিবারের হাত থেকে কোন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ কিন্তু নিরাপদ ছিল না।
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীরা যেই অত্যাচার করেছে, বিশেষ করে শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়া মানুষকে অত্যাচারিত করেছে।
আর শামীম ওসমানের ক্যাডার মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নিজাম মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানিও নির্যাতিত করেছিল। আমরা কিন্তু নারায়ণগঞ্জের উল্লেখিত কোন সন্ত্রাসীকে এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার হতে দেখিনি।
প্রশাসনকে আমরা বলতে চাই অতি দ্রুত এ সকল সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। শামীম ওসমান নিজেও কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের সভায় নির্ভয় ছাত্রদের উপর নিবিড়ভাবে অস্ত্র হাতে গুলি চালিয়েছিল। এই সকল কিমিনালরা কিভাবে বাংলাদেশ থেকে বের হয়ে গেল এটাও কিন্তু বিশাল একটি রহস্য বিষয়।
এই সকল সন্ত্রাসীদের অন্যান্য যারা দোষরা আছে যারা বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে আমি নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে আহবান করছি। আর বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে এরকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম কেউ করতে পারবে না।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে শহরের কিল্লারপুলস্থ বিবি মরিয়ম স্কুল মাঠে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ উপলক্ষ্যে গরীব ও অসহায়দের মাঝে ঈদ খাদ্য সামগ্রী এবং শাড়ি ,লুঙ্গি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় আব্দুল মোনায়েম মুন্না আরও বলেন, বিএনপি তথা অঙ্গ সংগঠনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কাউকে কোন প্রকার প্রবেশের সুযোগ দেয় যে চিহ্নিত হবে তার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কারো ক্ষমা নেই। আওয়ামী লীগের কোনো অনুপ্রবেশকারীকে কোনো অবস্থাতে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
কেউ যদি গোপনে অন্যায়ভাবে ফ্যাসিস্টদের সহযোগিতা করতে চায় তারা অবশ্যই চিহ্নিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর জনগণের কষ্ট হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। এটা আমরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। জনগণের জন্য রাজনীতি, জনগণের জন্যেই কাজ করতে হবে।
ত্বকী হত্যাকান্ড নিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জেন মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার এখনো হয়নি। এ হত্যাকান্ডের সাথে ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। অবিলম্বে মামলাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়াও ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময়ে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত মহানগর যুবদল কর্মী স্বজনের হত্যার বিচার এবং জেলা যুবদল কর্মী শাওন হত্যার বিচার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি'র চেয়ারম্যান তারেক রহমান মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। যেখানেই দুর্ঘটনা ঘটছে সেখানেই যোগাযোগ রাখছেন, তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন।
আগামী দিনে জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি চলছে এমনটি থাকবে না। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে, তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে, তিনি কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবেন না। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করে কেউ পার পাবে না। কোনো অন্যায়কারী পার পাবে না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদের সঞ্চালনায় এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.
আরো পড়ুন
মহানগর যুবদলের উদ্যোগে তারেক রহমানের ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ
নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা ও ইফতার অনুষ্ঠিত
তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রেজা রিপনের ঈদ সামগ্রী বিতরণ
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় পথচারীদের ইফতার বিতরণ
বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করেছে : মাসুম বিল্লাহ
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে আসবেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি মুন্না
কুরআনের আলোকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে : সাদ্দাম
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন র স দ ধ রগঞ জ য বদল র স ব যবস থ র পগঞ জ ব এনপ র জনগণ র অন ষ ঠ ক জ কর ন র ঈদ কর ছ ল আওয় ম র ঘটন ব তরণ ইসল ম ঘটন য় ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।