Samakal:
2025-12-13@10:06:57 GMT

ভোজ্যতেলে কাটছে না দুঃসময়

Published: 21st, March 2025 GMT

ভোজ্যতেলে কাটছে না দুঃসময়

সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও ভোজ্যতেলের বাজারে সংকট কাটেনি। পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জসহ চট্টগ্রামের বেশির ভাগ বাজারে মিলছে না চাহিদা মতো তেল। দোকানে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে ভোক্তার লিটারে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ১০-১৫ টাকা। তারা বলছেন, এবারের মতো কোনো রমজানে এত ভুগতে হয়নি ভোজ্যতেল নিয়ে।
রমজানের শুরু থেকে চট্টগ্রামের বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট। ভুক্তভোগীরা একের পর এক অভিযোগ তোলায় বাজার নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হন মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। নগরের বেশ কয়েকটি বাজারে অভিযানে গিয়ে তেলের দেখা না পেয়ে চোখ কপালে ওঠে তাদের। পরে আমদানিকারক, উৎপাদনকারী ও আড়তদারদের নিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জরুরি বৈঠক করেন। সংকট না কাটলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। তবে রমজান শেষের দিকে হলেও সংকট থেকে মুক্তি মেলেনি। রমজান শুরুর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে ঘোষণা দিলেও চিত্র ভিন্ন।
বহদ্দারহাট বাজারে স্বাভাবিক সময়ে খুচরা দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত এক ও দুই লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল সারি সারি সাজিয়ে রাখলেও এখন নেই সেই দৃশ্য। বাজারে গিয়ে কিছু দোকানে পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল দেখা গেছে। বোতলের গায়ে ৮৫২ টাকা লেখা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ৯০০ টাকার ওপরে। সরকার প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করলেও তা কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। এই বাজারের প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে চকবাজারেও দেখা গেছে একই রকম চিত্র।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৭ দিনে ১ লাখ টনের বেশি অপরিশোধিত তেল খালাস করা হয়েছে। একই সময়ে খালাস হয়েছে ২ লাখ টন সয়াবিন বীজও। সাতটি শিল্প গ্রুপ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত এসব খালাস করে। এ ছাড়া গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বন্দর থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল খালাস হয়েছে ২ লাখ ৩২ হাজার টন। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে রমজানে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে প্রায় ৩ লাখ টন। সরকার আমদানি বাড়াতে ও দাম কমাতে আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করলেও সুফল পাচ্ছে না ভোক্তা।
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সয়াবিন তেলের সংকটের পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত আছে। বাজার তদারকি করতে গিয়ে মনে হয়েছে কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী তেল সরিয়ে রেখেছে।’ 
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী তেল নিয়ে কারসাজি করছে। তারা চাহিদা মতো তেল সরবরাহ না করে নিজেদের গুদামে মজুত করছে।’
বহদ্দারহাটের আরএন ট্রেডিংয়ের মালিক মো. নওশাদ বলেন, ‘এখনও চাহিদা মতো তেল পাচ্ছি না। কয়েক সপ্তাহ আগে বুকিং দেওয়া তেল এখনও দোকানে আসেনি। তেল দিতে গড়িমসি করছে বেশির ভাগ কোম্পানি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল ব যবস রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে সম্প্রতি উচ্ছেদের শিকার হকাররা আবারও আগের জায়গায় বসার দাবি জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন ভবনের ২ নম্বর কক্ষে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ ও ভুক্তভোগী হকারদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাশরুমচাষি ও ক্যাম্পাসে হকারদের কাছে মাশরুম সরবরাহকারী রুবি আক্তার। সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা জেলার আহ্বায়ক শবনম হাফিজ। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল কবির ও আঁখি মনি এবং ভাসমান উদ্যোক্তা নুরুজ্জামান কমলসহ উচ্ছেদের শিকার কয়েকজন হকার।

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শবনম হাফিজ। তিনি বলেন, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক হকার কাজ করতেন। গত অক্টোবরে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে ডাকসুর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অসংখ্য হকার বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।

শবনম হাফিজ আরও বলেন, এই মানুষগুলোকে উচ্ছেদের নামে হয়রানি করা হলো, জিনিসপত্র নষ্ট করা হলো। এই ক্ষতির জবাবদিহি চাই, ক্ষতিপূরণ চাই এবং তাঁদের যেন সসম্মানে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি চাই। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেন তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেয়।

আয়োজকেরা বলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ও ভুক্তভোগী হকাররা উচ্ছেদের পর নিজেদের কার কী পরিস্থিতি ও কীভাবে তাঁদের বর্তমান জীবন চলছে, তা জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করছেন। এর আওতায় এ পর্যন্ত তাঁরা ৫০ জনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা তুলে ধরার লক্ষ্যেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে রুবি আক্তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় স্বামীর গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাহিদার ওপরই নির্ভর ছিল তাঁদের সংসার। হকার উচ্ছেদের পর সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে।

রুবি আক্তার বলেন, ‘একজন হকারের সঙ্গে আরও অনেকের আয় জড়িয়ে থাকে—সরবরাহকারী, পানিওয়ালা ও সবজিওয়ালা। একজনের আয় বন্ধ হলে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা চাই, হকারদের কাজের জায়গা আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হোক, বসতে দেওয়া হোক আগের জায়গায়। তাতে আরও অনেক পরিবার বেঁচে যাবে।’

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, হকার উচ্ছেদ ডাকসুর দায়িত্ব নয়। এটি মানবিক বা ন্যায়সংগত কোনো পদক্ষেপ নয়। হকারদের সম্মানজনক ব্যবসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করা সম্ভব।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায় ও অমানবিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকজন হকার নিজেদের বর্তমান সংকটের কথা জানান।

চার দফা সুপারিশ

অনুষ্ঠানে আয়োজকেরা চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো উচ্ছেদ করা হকারদের আগের কাজের জায়গায় ফেরার সুযোগ দেওয়া; কিছুদিন পরপর উচ্ছেদের নামে হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং যাঁরা এই নির্যাতন করেছেন, তাঁদের বিচার করা; প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন বা নিজেদের সমবায় বা ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা এবং কয়েক দফায় ভাসমান উদ্যোক্তাদের হাঁড়িপাতিল ও অন্যান্য যে মালামাল প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গেছে, তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেপিএমে চার দিন বাদে ফের ‌‘ব্যালটের কাগজ’ ছাপা শুরু
  • নতুন মাদক এমডিএমবি জব্দ, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
  • কমেছে সবজির দাম, বেড়েছে মাছের দাম
  • বাজারে বাড়তি পেঁয়াজ ও সয়াবিন তেলের দাম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের
  • কম্পিউটার বাজারে র‍্যামের সরবরাহে ঘাটতি
  • রাজশাহীতে দুই বছরের শিশু ৩০ ফুট গভীর গর্তে, ফায়ার সার্ভিস অক্সিজেন দিচ্ছে
  • পলিয়েস্টারের শাল ১০ বছর ধরে রেশমের বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্দিরে