কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদল ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয় ৪ জন সংবাদকর্মী মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার হওয়া এই ৪ জন হলেন, যমুনা টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি রফিকুর ইসলাম খোকন চৌধুরী, ক্যামেরা পার্সন সাকিব, চ্যানেল ২৪ এর প্রতিনিধি জাহিদ রহমান এবং ক্যামেরা পার্সন ইরফান। এরা শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং তাদের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

যমুনা টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি খোকন চৌধুরী বলেন, “ভুল চিকিৎসায় একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার আমরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছি।”

কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মীর শাহ আলম বলেন, “এটি খুবই নিন্দনীয় একটি ঘটনা। সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।”

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, “এ ধরনের হামলা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।” 

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.

মাসুদুর পারভেজের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

ঢাকা/রুবেল/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ড্যাবের নির্বাচন ৯ আগস্ট, দুটি প্যানেলই শক্ত

বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নির্বাচনকে সামনে রেখে চিকিৎসকদের একটি অংশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে ড্যাবের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকেরা। তবে ভোটার তালিকার কিছু ত্রুটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন।

ড্যাবের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন ৯ আগস্ট। নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি প্যানেলের পক্ষে সভাপতি ও মহাসচিব পদে দাঁড়িয়েছেন যথাক্রমে অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও জহিরুল ইসলাম শাকিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলে সভাপতি ও মহাসচিব প্রার্থী যথাক্রমে অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক ও অধ্যাপক আবদুস সাকুর খান। হারুন আল রশিদ ২০১৯ সাল থেকে ড্যাবের সর্বশেষ কমিটির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। আর অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক এর আগের ১৪ বছর অর্থাৎ ২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ড্যাবের সভাপতি ছিলেন।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল স্বাচিপ। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির বড় অংশীদার ছিল স্বাচিপ। সরকার পরিবর্তনের পর স্বাচিপ এখন চুপচাপ। নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য খাতে ড্যাবের উপস্থিতি অধিকতর দৃশ্যমান হবে বলে অনেকেই মনে করেন।

পেশাজীবী চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) থাকার পরও প্রায় প্রতিটি বড় রাজনৈতিক দলের চিকিৎসকদের পৃথক সংগঠন আছে। বিএনপির আছে ড্যাব, তেমনি জামায়াতের আছে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। এক বছর আগে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত আওয়ামী লীগের ছিল স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। আওয়ামী লীগের শাসনামলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল স্বাচিপ। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির বড় অংশীদার ছিল স্বাচিপ। সরকার পরিবর্তনের পর স্বাচিপ এখন চুপচাপ। নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য খাতে ড্যাবের উপস্থিতি অধিকতর দৃশ্যমান হবে বলে অনেকেই মনে করেন।

নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য খাতে ড্যাবের উপস্থিতি অধিকতর দৃশ্যমান হবে বলে অনেকেই মনে করেন।

ভোটার তালিকায় ৩ হাজার ১৩৯ জনের নাম আছে। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষের চিকিৎসকেরাই জানিয়েছেন, ভোটার তালিকায় কিছু ত্রুটি আছে। ড্যাবের আজীবন সদস্য—এমন কিছু চিকিৎসকের নাম তালিকায় নেই। আবার মারা গেছেন—এমন চিকিৎসকদের নাম তালিকায় আছে। অন্যদিকে নতুন যে তিন শর মতো চিকিৎসক সদস্য হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন, যাঁরা বিতাড়িত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এ নিয়ে কারও কারও মধ্যে ক্ষোভ বা অসন্তুষ্টি দেখা গেলেও প্রকাশ্যে কেউ বিরোধিতা করছেন না বা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাও কেউ বলছেন না।

ড্যাবের নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন আর কিছু করার নেই। যা আছে তা মেনে নিয়েই সবাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।’

প্রায় দেড় দশকে দেখা গেছে, ড্যাবের মধ্যেও দুটি ধারা বা পক্ষ আছে। গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শিশু হাসপাতাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ড্যাবের মধ্যেই দুটি পক্ষ স্পষ্ট। একটি পক্ষ ড্যাবের সাবেক মহাসচিব ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের অনুসারী। অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক ও অধ্যাপক আবদুস সাকুর খানের প্যানেলটি এদিকে আছে। জাহিদ হোসেন–বিরোধী বলে পরিচিত ড্যাবের সদস্যদের একটি অংশ আছে প্রতিদ্বন্দ্বী অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও জহিরুল ইসলাম শাকিল প্যানেলে।

ড্যাবের কোনো পক্ষেরই সমর্থক তিনি নন, কারও ঘোর বিরোধীও নন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। এই নির্বাচন থেকে চিকিৎসকেরা এবং দেশবাসী সৎ ও সময়োপযোগী নেতৃত্ব পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।ড্যাবের আজীবন সদস্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন শাখাওয়াত হোসেন

গতকাল দুই প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ কে এম আজিজুল হক ও হারুন আল রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।

ড্যাবের আজীবন সদস্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ড্যাবের কোনো পক্ষেরই সমর্থক তিনি নন, কারও ঘোর বিরোধীও নন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। এই নির্বাচন থেকে চিকিৎসকেরা এবং দেশবাসী সৎ ও সময়োপযোগী নেতৃত্ব পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ড্যাবের নির্বাচন ৯ আগস্ট, দুটি প্যানেলই শক্ত