চট্টগ্রামে বস্তাবন্দি অবস্থায় এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে নগরীর খুলশী থানার লালখানবাজারে ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, তাঁর বয়স ৩০ কিংবা এর কিছু বেশি হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বাসে করে কোচিংয়ে যাচ্ছিলেন। বাসের জানালা দিয়ে বস্তাবন্দি মরদেহটি দেখতে পান। বাস থেকে নেমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন ওই শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

খুলশী থানার ওসি আফতাব হোসেন বলেন, ‘মরদেহ পচন প্রক্রিয়ার একেবারে সেকেন্ড স্টেজ যেটাকে আমরা বলি, সে অবস্থায় পেয়েছি। অন্তত দুই দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। বস্তাবন্দি মরদেহটি ফ্লাইওভারের নিচে আইল্যান্ডের মাঝামাঝিতে কম্বল মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল। দেখে মনে হবে, ভাসমান লোকজন কেউ ঘুমাচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা মরদেহ উদ্ধার করি। শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না। মরদেহ যেহেতু বস্তার ভেতরে পাওয়া গেছে, এটা ধরে নিতে পারি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে সবকিছু পরিষ্কার হবে। মৃত নারীর পরিচয় শনাক্তের জন্য সিআইডি কিংবা পিবিআইর মাধ্যমে আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ