বাজারে যত ধরনের এয়ার কন্ডিশনার পাওয়া যায়
Published: 23rd, March 2025 GMT
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) পাওয়া যায়, যা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়। আগে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) শুধু গরমের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো; কিন্তু আধুনিক এসিগুলো এখন আরও অনেক উপকারী সুবিধা নিয়ে আসছে। তাই বাসাবাড়িতে এসির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। একসময় এসি ব্যবহারের চল ছিল ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। গরমের দিনে এটি আরামদায়ক ঠান্ডা পরিবেশ তৈরি করে, যা ঘুম, কাজ ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় স্বস্তি আনে। এখন বেশির ভাগ আধুনিক এসিতে এয়ার পিউরিফায়ার বা ফিল্টারিং সিস্টেম থাকে; যা ধুলা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে। এসি বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে, ঘরের আসবাব রক্ষা করে এবং ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া কমায়।
বাজারে প্রচলিত এসির ধরন
ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার মো.
কোন জায়গায় কেমন এসির প্রয়োজন
ছোট ঘর বা ব্যক্তিগত কক্ষের জন্য স্প্লিট এসি বা পোর্টেবল এসি ব্যবহারের চল দেখা যায়। সাধারণ বাসাবাড়িতে স্প্লিট এসি এখন ভীষণ জনপ্রিয়। মাঝারি বা বড় ঘরেও প্রয়োজন বুঝে স্প্লিট এসি ব্যবহার করা যায়। অফিস বা বাণিজ্যিক স্থানে ক্যাসেট বা সেন্ট্রাল এসি ব্যবহার করা হচ্ছে। বহু কক্ষবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল এসি বা মাল্টি-ভিআরএফ এসি ব্যবহার করা হয়। ১০০–১২০ বর্গফুট জায়গায় ১ টন এসি, ১৮০ বর্গফুটের জন্য ১.৫ টন এসি, ২৫০ বর্গফুটের জন্য ২ টন এসি ব্যবহার করলে ভালো সুফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৩৫০ বর্গফুটের অধিক জায়গার জন্য বেশি টনের এসি ব্যবহার করা হয়। ১ টন এসি সাধারণত ছোট বেডরুম, স্টাডি রুম, অফিস কিউবিকলে ব্যবহার করা যায়। ১.৫ টন এসি মাঝারি আকারের শোবার ঘর বা লিভিং রুমে বেশ কার্যকর। ২ টন এসি বড় ড্রয়িংরুম, ক্লাসরুম, ছোট অফিস বেশ সুবিধাজনক। এর বাইরে ব্যাংক, রেস্টুরেন্ট, শোরুম, বিভিন্ন সম্মেলনকক্ষের আকার বুঝে বড় আকারে এসি ব্যবহারের সুযোগ আছে।
ইনভার্টার এসি বনাম নন-ইনভার্টার
বাজারে ইনভার্টার এসি দেখা যায়। এমন এসির কম্প্রেসর ধীরে ধীরে গতি পরিবর্তন করে। কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এটি ঘরের তাপমাত্রা ধরে রাখে ও প্রয়োজন অনুযায়ী কম্প্রেসরের গতি কমিয়ে বাড়িয়ে কাজ করে। যেখানে দীর্ঘ সময় এসি চালু রাখতে হয়, যেমন বাসাবাড়ি, ড্রইংরুম, অফিসে এমন এসি ব্যবহার করা হয়। যারা বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও টেকসই এসি চান, তারা এমন এসি ব্যবহার করেন। আর নন-ইনভার্টার এসির কম্প্রেসর অন বা অফ মোডে চলে। যখন তাপমাত্রা বাড়ে, তখন কম্প্রেসর চালু হয় এবং প্রয়োজন শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায়। যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ এবং বিদ্যুৎসাশ্রয় চান, তবে ইনভার্টার এসি সেরা। আর যদি কম সময়ে কম খরচে এসি চালাতে চান, তবে নন-ইনভার্টার এসি ভালো হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স প ল ট এস র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তুরস্কের যে কৌশলে ‘জিহাদি’ শারা হয়ে উঠলেন সিরিয়ার ‘আমির’
২০১৯ সালের বসন্ত। রুশ বিমানবাহিনীর সহায়তায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইদলিবের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তৈরি হয় জরুরি পরিস্থিতি।
হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জোলানি (আহমেদ আল–শারা নামে বেশি পরিচিত) তখন ইদলিবের কেন্দ্রস্থলে একটি নিরাপদ বাড়িতে তাঁর সহযোগী ও কয়েকজন বিদেশি অতিথির সঙ্গে বসেছিলেন। অতিথিদের মধ্যে তুর্কিও ছিল।
রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল–শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’
আশ–শারা বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন ছিল শুভ ইঙ্গিত, নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্রষ্টার একধরনের বার্তা। তাঁর বিশ্বাস ছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কঠিন হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেতা সম্ভব। তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা, যাঁদের মধ্যে সালাফি পটভূমির লোকও ছিলেন। বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন সত্যি তিনি বিশ্বাস করতেন।
ওই গল্প বলার প্রায় পাঁচ বছর পর আহমেদ আল–শারা তাঁর বিদ্রোহী খেতাব কাটিয়ে সিরিয়ান আরব রিপাবলিকের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ সেই ‘আমির’ হন, যার স্বপ্ন তিনি একসময় দেখেছিলেন।
রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল-শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’এখন জোলানি নিজের জন্মনাম আহমেদ আল–শারা নামে পরিচিত। ৪৩ বছরের শারা খুব দ্রুতই নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। একসময়ের ‘জিহাদি সন্ত্রাসী’ (যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কথায়) থেকে এখন রাষ্ট্রনেতা তিনি। ইরাক থেকে সিরিয়া। দীর্ঘ সময় আল–কায়েদা ঘরানার বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে সক্রিয় থাকার পর এমন পরিবর্তন বিস্ময়করই বলা যায়।
আসাদ পরিবারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শারা এখন সেসব বিশ্বনেতার সঙ্গেও মিশছেন, যাঁদের তিনি একসময় এড়িয়ে চলতেন। তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জনসমক্ষে উপস্থিত হন, শ্মশ্রু ছোট করেছেন, পাগড়ি ও থোব (ঐতিহ্যবাহী দীর্ঘ ঢিলেঢালা পোশাক) ছেড়ে স্যুট–টাই পরছেন। সব মিলিয়ে এমন একটি নতুন রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করছেন, যেখানে স্পষ্ট ইসলামি প্রভাব নেই।
কিন্তু এ রূপান্তর কীভাবে সম্ভব হলো
তুরস্কসহ আঞ্চলিক কর্মকর্তারা, সিরীয় সূত্র, বিশেষজ্ঞ, এমনকি সিরিয়ার সরকারি শাসনব্যবস্থার ভেতরের লোকেরাও মনে করেন, ইদলিবে শারার শাসনামলেই ধীরে ধীরে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও ভূমিকার এ পাল্টে যাওয়া শুরু হয়। ইদলিব মূলত একধরনের অনানুষ্ঠানিক ‘ক্ষুদ্র রাষ্ট্র’ হয়ে উঠেছিল, যা শারার ভাবমূর্তিকে পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
‘তাঁর (আল–শারা) রূপান্তরে তুরস্ক খুবই বাস্তব ভূমিকা রেখেছে’, এইচটিএসের নেতা থাকাকালীন শারার সঙ্গে দেখা করা একজন তুর্কি কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন।
তুরস্কের সঙ্গে প্রথম বড় যোগাযোগ
তুর্কি কর্মকর্তার মতে, শারার নিজেরও বদলে যাওয়ার কারণ ছিল। সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে টিকে থাকতে হতো, আর তুরস্কই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা। কারণ, তিনি এমন এক এলাকায় আটকে ছিলেন, যেখানে আঙ্কারা ছিল তাঁর জীবনসঞ্চারণী রেখার মতো।
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে, ১৪ মে ২০২৫