ভক্তের মুখের ওপর উদ্যাপন করতে চান রোনালদো
Published: 23rd, March 2025 GMT
নিজের ‘আইডল’ বা আদর্শের সামনে গোল করে তাঁর মতো করে উদ্যাপন নিশ্চিতভাবে দারুণ কিছু। কদিন আগে তেমনই এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন রাসমুস হয়লুন্দ।
নেশনস লিগে পর্তুগাল–ডেনমার্কের শেষ আটের ম্যাচে গোল করার পর রোনালদোর সামনেই তাঁর মতো করে ‘সিউ’ উদ্যাপন করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাচ তারকা রাসমুস হয়লুন্দ।
সেদিনের পর থেকে হয়লুন্দের উদ্যাপন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। হয়লুন্দ অবশ্য বলেছেন, অপমান বা অসম্মান করার উদ্দেশ্যে না, তিনি শুধু নিজের আদর্শকে অনুকরণ করেছেন।
আরও পড়ুন‘ভক্তে’র কাছে হার রোনালদোর, হার এমবাপ্পেরও, জিতল জার্মানি২১ মার্চ ২০২৫হয়লুন্দ বলেছেন, ‘এটা আমার আদর্শের জন্য। এটা এমন না যে আমি তাকে ব্যঙ্গ করছি বা তেমন কিছু। আমি সব সময় বলেছি, আমার জন্য এবং আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
২২ বছর বয়সী হয়লুন্দের এই উদ্যাপন এবং তাঁর কথার জবাব দিয়েছেন রোনালদোও। হয়লুন্দের উদ্যাপনে অসম্মানজনক কিছু খুঁজে না পেলেও সেই উদ্যাপন ফিরিয়ে দিতে প্রত্যয়ী ‘সিআর সেভেন’। রোনালদো বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য সমস্যা না। আমি জানি এখানে অসম্মানজনক কিছু ছিল না। আর পৃথিবীতে সে শুধু একা না যে আমার মতো উদ্যাপন করেছে। এটা বোঝার মতো যথেষ্ট বুদ্ধি আমার আছে। এটা আমার সম্মানেই করা।’
এরপরই অবশ্য আসল কথাটা বলেছেন রোনালদো, ‘আশা করি আগামীকাল (আজ রাতে) আমিও তাঁর সামনে উদ্যাপন করতে পারব। এটা দারুণ হবে। আমি আনন্দিত যে আমার উদ্যাপন তাঁর পছন্দ হয়েছে।’
আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ফিট থাকতে বিশেষ যে খাবার খাচ্ছেন রোনালদো১৮ মার্চ ২০২৫হয়লুন্দ অবশ্য আগেও রোনালদোর প্রতি নিজের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেছিলেন, ‘আমি বাড়িয়ে বলছি না। তবে ক্রিস্টিয়ানো আমার কাছে সবকিছু। ক্রিস্টিয়ানোর কারণেই আমি ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করি। আমি ঘুমাতে যাওয়ার আগে নানা ধরনের শারীরিক কসরত করি শুধু ক্রিস্টিয়ানোর জন্য। কারণ, আমি রোনালদোর মতো হতে চাই।’
আরও পড়ুনমেসি ও রোনালদো এখন কত টাকার মালিক১৪ মার্চ ২০২৫ডেনমার্কের বিপক্ষে ফিরতি লেগে আজ রোনালদোদের সামনে চ্যালেঞ্জটা ঘুরে দাঁড়ানোর। প্রথম লেগে ১–০ গোলে হারায় এখন বেশ চাপেও আছে তারা। তবে যেকোনো মূল্যে আজ রাতে দলের জয় চান রোনালদো, ‘এটা শুধু আমার গোল করার ব্যাপার না। আমি শুধু চাই পর্তুগাল ম্যাচটা জিতুক। যদি আমি না খেললে দল জেতে, তাই হোক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল ছ ন র জন য র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ৩ যুবককে গণপিটুনি দিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর
সাতক্ষীরার দেবহাটায় সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় তিন যুবককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও আটক করা হয়। তবে আটক তিনজনের সাথে থাকা অপর দু’জন পৃথক একটি মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পুষ্পকাটি সরদার বাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আটককৃতরা হলো- দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে মো. নাহিদ হোসেন (৩০), আশাশুনি উপজেলার গোদাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর গাজীর ছেলে মো. আব্দুর রহমান (৩২) ও শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে মো. আব্দুর রহিম (৩৫)।
পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে পালিয়ে যাওয়া দুই সহযোগীসহ আটককৃতরা পুষ্পকাটি গ্রামের আ’লীগ নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর বাড়িতে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। বাদানুবাদের সূত্র ধরে তারা ওই বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা গোলাম রব্বানীকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় স্থানীয়রা সংঘবদ্ধ হয়ে তিনজনকে আটক করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটককৃতদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাতে আটক তিন যুবককে দেবহাটা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
আ’লীগ নেতা গোলাম রব্বানীর ভাই আব্দুর রব জানান, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে পাঁচ যু্বক দু’টি মোটরসাইকেলযোগে তার ভাইয়ের বাড়িতে যায়। এ সময় তারা নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে স্থানীয় জনৈক রফিকের কাছে পাওনা ৫০ হাজার টাকার জন্য এসেছেন বলে গোলাম রব্বানীকে জানান। কথোপকথনের একপর্যায়ে তারা গোলাম রব্বানীকে বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় বাদানুবাদের সময় আটককৃতরা তার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে এবং বাড়িতে ঢুকে ভাংচুরসহ লুটতরাজ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সম্মিলিতভাবে হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে।
পরে ওই গ্রামের নৌবাহিনীতে কর্মরত এক ব্যক্তির মাধ্যমে সেনা ক্যাম্পে যোগাযোগ করে। পরে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর আটককৃতদের সেনাবাহিনীর হাতে ও মোটরসাইকেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আব্দুর রবের দাবি, তার ভাই আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ায় এবং ইট ভাটার মালিক হওয়ার সুযোগে আটককৃতরা চাঁদা দাবি করেছিল। দুই সহযোগী পালিয়ে গেলেও আটক তিন তরুণকে স্থানীয়রা গণপিটুনি দেয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।
গোলাম রব্বানী জানান, তিনি ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পাঁচ তরুণ দুপুরের দিকে অস্ত্রসহ তার বাড়িতে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তার দুই বাহুসহ পিঠে ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত করে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় তিনজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। তার দাবি পালিয়ে যাওয়া দুই তরুণ তার বাড়ি থেকে ৯ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। আটককৃতদের মোটরসাইকেল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা সদর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর ইফতেখার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেবহাটা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মুজাহিদ ফিরোজ জানান, গোলাম রব্বানী আওয়ামী লীগের নেতা। সমন্বয়করা বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে গেলে তাদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে তিনজনকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এটা একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরাফাত হোসেনের ভাষ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিল তারা (আটককৃতরা)। তবে বর্তমানে তাদের কেউ কোনো কমিটিতে নেই। বরং নানা অপরাধমূলক অপতৎপরতায় জড়িত। সমন্বয়ক পরিচয়ে তারা যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থী। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, রাতে সেনাসদস্যরা চাঁদাবাজির সাথে জড়িত তিনজনকে থানায় হস্তান্তর করেছে। গোলাম রব্বানীর দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। পালিয়ে যাওয়া দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।