দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট। ঈদ মৌসুমে নৌরুট দুইটিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ যানবাহন বৃদ্ধি পায়। ফলে নদী পারাপারে ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায়।

যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ২৩টি ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাট কৃর্তপক্ষ। তাদের দাবি, পর্যাপ্ত ফেরি চলাচল করায় এবারের ঈদ মৌসুমে নৌরুট দুইটিতে ভোগান্তি পোহাতে হবে না। 

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয় জানায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিশ্চিত করতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৭টি এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ছয়টি ফেরি চলাচল করবে। আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যানবাহনের মধ্যে বেশিরভাগ ট্রাক পারাপার হয়। দুইটি নৌরুটে ঈদের  আগে ও পরে ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। তবে, জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার করা হবে। ফেরি মেরামতের জন্য পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ভাসমান কারখানা মধুমতি প্রস্তুত থাকবে। 

আরো পড়ুন:

সমুদ্রগামী ফেরির যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ

সস্ত্রীক ছিনতাইকারীর কবলে ফেনী স্টেশন মাস্টার, গ্রেপ্তার ৩

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরির মধ্যে ১১টি রোরো, একটি কেটাইপ, দুইটি ইউটিলিটি, তিনটি ছোট ফেরি চলাচল করবে। এ নৌরুটের চ্যানেলের দূরত্ব তিন কিলোমিটার। বর্তমান সময়ে ফেরির আকারভেদে পার হতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। 

আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে পাঁচটি বড় ও একটি ছোট ফেরি চলাচল করবে। এই নৌরুটের চ্যানেলের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। একেকটি ফেরি গন্তব্য পৌছাতে সময় নেয় দুই ঘণ্টা। 

আরিচা ঘাটে ফেরির অপেক্ষায় থাকা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক ইব্রাহিম খলিল বলেন, “পদ্মা সেতু চালুর পর স্বাভাবিক সময়ে ফেরি পেতে এখন আর তেমন সিরিয়ালে থাকতে হয় না। ঈদ মৌসুমে ভিড় বাড়ায় পারাপারের সময় সিরিয়ালে থাকতে হয়। নাব্য সংকটে ফেরি পারাপারে বেশি সময় লাগে।” 

রাজবাড়ীগামী যাত্রী মহিবুল হাসান বলেন, “ফেরি সংকট না হলে নৌরুটে তেমন ভোগান্তি হয় না। আগের তুলনায় নৌরুটে অনেক চাপ কমেছে। ঈদ মৌসুমে ভিড় বৃদ্ধি পেলেও পর্যাপ্ত ফেরির কারণে ভোগান্তি না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফেরির যাত্রী পরিবহনে অতিরিক্ত অর্থ আদায় যাতে না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখার জন্য অনুরোধ করছি।” 

আরিচা ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, “আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঈদের সময় ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ বাড়ে। তবে ছয়টি ফেরি চলাচল করায় তেমন কোনো ভোগান্তি হবে না বলে আশা করছি।” 

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম ( বাণিজ্য)  নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, “ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরি চলাচল করায় যাত্রীদের ভোগান্তির কোনো শঙ্কা নেই। ঘাট এলাকায় পন্টুন, র্যাম মেরামতসহ সব প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে।” 

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ট র য় দ লতদ য় ফ র ঘ ট ঈদ উৎসব ঈদ ম স ম প রস ত ত দ লতদ য়

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা—রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে আসা কর্মজীবীরা বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে পৌঁছে লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটে প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসা পোশাকশ্রমিক মো. সাব্বির হোসেন হাত ধরে নববধূর সঙ্গে লঞ্চে উঠছিলেন। তিনি জানান, ঢাকার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় দুজনেই কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর এটাই তাঁদের একসঙ্গে কর্মস্থলে ফেরার প্রথম যাত্রা।

সাব্বির বলেন, বালিয়াকান্দি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। রাস্তায় তেমন ভোগান্তি না থাকলেও লঞ্চঘাটে এসে ভিড়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে তাঁদের কারখানা খুলছে, তাই আজই রওনা হয়েছেন। ভিড়ের মধ্যে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়, সে জন্য এক হাতে লাগেজ ও আরেক হাতে নববধূর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে আসা আরেক পোশাকশ্রমিক মিম আক্তার বলেন, তিনি সাভারের একটি কারখানায় কাজ করেন। ছুটিতে বাড়ি এসে ঈদ করেছেন। শনিবার কারখানা খুলবে—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনেকে সঙ্গে নিয়ে আজই রওনা হয়েছি। দেরি করলে ঝামেলা হতে পারে।’

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের সেতু পেরিয়ে সারিবদ্ধভাবে যাত্রীরা পন্টুনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিটকর্মীরা সেতুতে উঠে টিকিট দিচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ কয়েক মিনিটেই যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাটে আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সামলানো হচ্ছে।

দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মাসুদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভিড় কম ছিল, তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চাপ বাড়ছে। শনিবার থেকে অফিস ও কারখানা খোলার কারণে অনেকে আজই ফিরছেন।

ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি আবদুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও আজ সকাল থেকে ঘাটে ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই চাপ শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. শিমুল হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চের মধ্যে ১৮টি চলাচল করছে। অতিরিক্ত চাপ পড়লে বাকি দুটি লঞ্চও চালু করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
  • দ্বিতীয় ট্রিপেই মেঘনায় ডুবল বালুবাহী বাল্কহেড
  • নৌযানের অভাবে নদী তীরে ঢাকামুখী যাত্রীদের অপেক্ষা
  • ভোলা লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ে বৈধ নৌযান–সংকট, ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি
  • রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট