বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে বকেয়া বেতন-বোনাস চান শ্রমিকেরা
Published: 26th, March 2025 GMT
ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধ ও বোনাসের দাবিতে সচিবালয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে পোশাকশ্রমিকদের কর্মসূচি। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেসক্লাব এলাকায় লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন পোশাকশ্রমিক, ছাত্রসংগঠনের নেতা ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা পরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাতে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে পোশাকশ্রমিকেরা শ্রম ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। প্রেসক্লাব এলাকায় সড়কে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে পড়ে মিছিলটি। বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ের দিকে এগোতে চাইলে শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে শ্রমিকদের ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। পুলিশের ধাওয়ায় একপর্যায়ে শ্রমিকেরা ওই এলাকা ছেড়ে যান।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, পুলিশের কয়েক সদস্য মিলে এক ব্যক্তিকে পেটাচ্ছেন। তাঁকে বাঁচাতে গেলে এক নারীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। জানা গেছে, পিটুনির শিকার ব্যক্তির নাম দিলীপ রায়। তিনি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম বলেন, সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল পোশাকশ্রমিকদের পূর্বনির্ধারিত। গাজীপুরের টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড এবং অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারীরা তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রম ভবনের সামনে গত রোববার থেকে অবস্থান করছিলেন। সাড়া না পেয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে (সচিবালয়) যাওয়ার পথে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাঁদের বাধা দেয়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, পোশাকশ্রমিকেরা সচিবালয়ের যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়া হলে পুলিশের ওপর চড়াও হন তাঁরা। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনাকে ‘পুলিশি হামলা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এ ছাড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ। বাম গণতান্ত্রিক জোট এক বিবৃতিতে ঈদের আগে শ্রমিকের বকেয়া পাওনা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুনপুলিশ আগের মতোই শ্রমিকদের দমনকারী হিসেবে রয়ে গেছে: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি৫৯ মিনিট আগেএ ছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা জিনস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড চালু, ছুটি বৃদ্ধিসহ আরও কয়েকটি দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা। কারখানার ব্যবস্থাপক মো.
তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কামরাঙ্গীচালা এলাকায় হ্যাগ নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন।
কালিয়াকৈর থানার মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুস সেলিম বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।