বন্দরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে বন্দরে ২৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি সফর আলী (৫০) সহ কমপক্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছে।

আহতদের মধ্যে ইছাক (৪০) রশিদ (৪০) জহিরুল (৩২) শফিকুল (৪৫) মামুন (৩৫)  ও বেলায়েত (১৬) এর নাম জানাগেলেও অন্য আহতদের নাম পরিচয় তাৎক্ষনিক ভাবে জানা যায়নি । স্থানীয়রা তাদের মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। 

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের রামনগর ইস্পাহানী এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ওই সময় হামলাকারি রাসেল, আল আমিন, আমানত, জিসান, মনির ও মামুন ডাকাতসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর চালিয়ে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

এ ঘটনায় আহত সাবেক যুবদল নেতার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বাদী হয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে উল্লেখিতদের আসামি করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ২৬নং ওয়ার্ড সোনাচড়া এলাকার মৃত মো.

আলী বেশ কিছু দিন পূর্বে তালতলা রোলিং মেইলে প্লেট পরে দুর্ঘটনা বসত মৃত্যুবরন করেন। পরবর্তীতে বাদিনী স্বামী সফর আলী ও এড. বিল্লাল হোসেন মধ্যস্থতায় মৃত ব্যাক্তি মো. আলীর স্ত্রীকে   দশ লাখ টাকা রোলিং মেইলের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে নিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে বেশ কিছু দিন ধরে সকল বিবাদীরা মৃত মো. আলীর স্ত্রী কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল । চাঁদা দাবির ঘটনা জানতে পেরে বাদিনী স্বামী যুবদল নেতা সফর আলী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজ রাসেল ও আলামিন গংদের  সাথে বাকবিতন্ড ও তর্কাতর্কী হয়।

এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২৮ মার্চ)  বিকেল সাড়ে ৫টায় রামনগর ইস্পাহানী এলাকার মতি মিয়ার ছেলে চাঁদাবাজ রাসেল একই এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে আল আমিন, মৃত আল ইউনুছ মিয়ার ছেলে আমানত ও একই এলাকার আকবর ডাকাতের ২ ছেলে মনির ও মামুন ডাকাতসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন সন্ত্রাসী ধারালো দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবদল নেতা সফর আলী বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বসত বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। 

ওই সময় হামলাকারিরা বেশ কয়েকটি বসত ঘর ব্যাপক ভাংচুর করে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে সাবেক যুবদল নেতাসহ ৭ জন রক্তাক্ত জখম হয়।

সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে । এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ গুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।   
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ য বদল ন ত স ঘর ষ এল ক র ঘটন য় র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে

জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৯ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে তাঁরা এ ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করছেন।

রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে। এসব সড়কে দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ফলে বৃষ্টির মধ্যে জীবনের তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলে গণপরিবহন, অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে হেঁটে হেঁটে। বিশেষ করে অফিসফেরত মানুষকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বেলা ১১টায় শাহবাগ মোড়ের সঙ্গে যুক্ত সব সড়কের মুখ আটকে দিয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। এ সময় তাঁরা জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই যোদ্ধা সংসদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম ওই কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়। এ সময় অবরোধকারীরা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাইয়ের চেতনা দিতে হবে ঘোষণা’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বন্ধ হয়ে পড়ে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানগামী প্রধান সড়কগুলোও। ফলে সকাল থেকেই এসব এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে চলাচলকারী গণপরিবহনগুলো বিকল্প পথে চলাচল করে।

বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ–সংলগ্ন মূল সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড ও বাঁশ ব্যবহার করে সড়ক আটকে রেখেছেন অবরোধকারীরা। শাহবাগ থানার সামনের সড়কেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তাঁরা।

বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব নূরে আলম বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যাব। কোনো বাস পাচ্ছি না। রিকশায় যে কিছু দূর যাব, তারাও ভাড়া বেশি চাচ্ছে।’ একপর্যায়ে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।

এক পথচারী ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর সড়ক অবরোধ হয়। এর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতে দেখা যায় মোটরবাইক আরোহীদের। শাহবাগ থানার সামনে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে বাধা দিলে চালক বলেন, ‘এত দাবিদাওয়া এত দিন আছিলো কই।’ তবে গণপরিবহন আটকে দেওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা গেছে।

অবরোধকারীদের দাবি

অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি; শহীদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান; চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা; আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা; আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা; শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তাকেন্দ্র গঠন করা; শহীদ ও আহতদের ওপর সংগঠিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারকাজ সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালিদ মনসুর বলেন, সকাল থেকেই শাহবাগে অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে জুলাই যোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলছে। সনদ ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা এখানেই থাকবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
  • ৯ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ, জনভোগান্তি চরমে
  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
  • জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ