Samakal:
2025-08-01@04:36:08 GMT

ঈদ আছে, নেই শুধু ঈদকার্ড

Published: 29th, March 2025 GMT

ঈদ আছে, নেই শুধু ঈদকার্ড

‘বন্ধু তুমি অনেক দূরে। তাই তো তোমায় মনে পড়ে।’ ‘বাকা চাঁদের হাসিতে, দাওয়াত দিলাম আসিতে। আসতে যদি না পারো, ঈদ মোবারক গ্রহণ করো।’ 
দুই দশক আগেও ঈদ এলে এমন নানা আন্তরিক কথায় পূর্ণ রং-বেরঙের ঈদকার্ড বিনিময় হতো বন্ধুদের মধ্যে। পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীরা ঈদ এলেই দোকানে ভিড় করতেন নতুন ঈদকার্ড সংগ্রহে। দোকানিরা চেষ্টা করতেন নতুন নতুন ডিজাইন ও লেখাযুক্ত ঈদকার্ড সংগ্রহে রাখতে। আবার বিভিন্ন পাড়ায় মৌসুমি বিক্রেতারা খুলে বসতেন ঈদকার্ডের পসরা। ৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো এসব ঈদকার্ড। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতিতে আজ যেন হারিয়ে গেছে ঈদকার্ডের সেই নস্টালজিয়া। যে নস্টালজিয়া হয়তো আশি বা নব্বই দশকে শৈশব-তারুণ্য না কাটানো কারও পক্ষে অনুধাবন করা কঠিন।  

মোবাইল ফোন সহজলভ্য হওয়ার পর অনেকেই এসএমএসের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। কিন্তু এখন ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে আসে ঈদের শুভেচ্ছা। গত শুক্রবার দুপুরে কথা হচ্ছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহরের গণমোড় এলাকার পদ্মা কসমেটিকসের প্রোপ্রাইটর সুকুমার সাহার সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, প্রায় ৩৫ বছর ধরে কসমেটিকসের ব্যবসা করছেন। বর্তমানে দোকানে স্নো, পাউডার, সাবান, কাচের চুড়িসহ অন্তত দুই হাজার ধরনের পণ্য রয়েছে। নেই শুধু এক সময়ের ঈদকার্ড। ক্রেতা না থাকায় এখন ঈদকার্ডের খোঁজও রাখেন না।
কুমারখালী প্রধান শহরের সোনাবন্ধু সড়কের হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, পাবলিক লাইব্রেরি এলাকার অন্তত ২০টি কসমেটিকসসহ স্টেশনারি দোকান ঘুরে কোথাও ঈদকার্ড পাওয়া যায়নি। 
ঈদকার্ড কি? কখনও দেখিনি। চিঠিও লেখা হয়নি কখনও বলে জানায় কুমারখালী আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। তবে ব্যতিক্রমও আছে। অনলাইনে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এবার বেশকিছু ঈদকার্ড কিনে গ্রামের বাড়ি কুমারখালী ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূর ই সিয়াম উচ্চারণ। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের দিকে চাচাতো বোন প্রথম ঈদকার্ড দিয়েছিল। এরপরে আর কাউকে ঈদকার্ড দেওয়াও হয়নি, নেওয়াও হয়নি। তবে এবার বেশকিছু কার্ড কিনেছি প্রিয়জনকে দেব বলে। পুরোনো এই সংস্কৃতি আবার ফিরিয়ে আনা উচিত। 
ঈদকার্ডের মতোই হারিয়ে গেছে একসময়কার নস্টালজিয়া ক্যাসেট, সিডি, ডিভিডি। ঈদের আগে খ্যাতিমান বিভিন্ন শিল্পীর ঈদ অ্যালবাম এলে দোকানে দোকানে ক্যাসেট, সিডি, ডিভিডি কেনার ভিড় হতো। কোন শিল্পীর নতুন কী অ্যালবাম বের হয়েছে, তা নিয়ে খোঁজ নিতেন তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু হাতে হাতে স্মার্টফোনের এই যুগে হারিয়ে গেছে সেই ট্রেন্ডও। জীবিকার তাগিদে পেশা বদলেছেন ক্যাসেট, সিডি, ডিভিডি ব্যবসায়ীরা।

৯০ দশক থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অডিও ক্যাসেড, ভিসিডি ও সিডির জমজমাট ব্যবসা ছিল কুমারখালী পৌর মার্কেটের জাহিদুল ইসলাম মিঠুর। কিন্তু এখন আর তাঁর দোকান নেই। এখন কাপড়ের ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, বছর সাতেক হলো কাপড়ের ব্যবসা করছি। আগে অডিও ক্যাসেট, সিডি, ডিভিডি বিক্রি করতাম। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই নানা বয়সী মানুষ ভিড় করত দোকানে নতুন অ্যালবাম কিনতে। কিন্তু মোবাইল ফোনের কারণে সেসব ব্যবসা হারিয়ে গেছে। পুরোনো সে দিনগুলো খুব মিস করেন। কিছুদিন আগে অচল ক্যাসেট-সিডি ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ উৎসব ঈদক র ড র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ