ঈদের আনন্দ স্বজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে সড়ক-মহাসড়কে। এর প্রভাব পড়েছে পদ্মা ও যমুনা সেতুতে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দুই সেতু দিয়ে প্রায় ২০ হাজার মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে।

নির্বিঘ্নে পদ্মা সেতু অতিক্রম করছে ঘরমুখী মানুষ। দুটি লেনে মোটরসাইকেলসহ ৯টি লেনে মানুষ সেতুতে প্রবেশ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় অস্থায়ী একটি টোল বুথ চালু করা হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী ফেরদৌস জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪২ ঘণ্টায় পদ্মা সেতু দিয়ে ৬৪ হাজার ৭৪০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এসব যানবাহনের মধ্যে ১৬ হাজার মোটরসাইকেল।

পদ্মা সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ৩৯ হাজার ৬৩৭টি যান পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল প্রায় ১০ হাজার।
তিনি বলেন, চৈত্রের দাবদাহ থেকে বাঁচতে অনেকেই ভোরে রওনা দেন। তাই সকালে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় লম্বা লাইন দেখা যায়। মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রো, বাস, ট্রাক সব ধরনের যানবাহনই সেতু পারাপার হচ্ছে। কখনো যানবাহনের চাপ বেড়ে সারি দীর্ঘ হচ্ছে। আবার কখনো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে তিন গুণ। তবে যানজট নেই। স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলছে। মহাসড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ৯ হাজার ১৬৩টি মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ১৫০ টাকা। শনিবার ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে যমুনা সেতুর টোল প্লাজায় মোটারসাইকেলের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। 
যযুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই পাশে ৯টি করে মোট ১৮টি বুথ দিয়ে যানবাহন পার হচ্ছে। এ ছাড়া দুই পাশেই মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা দুটি করে চারটি বুথ রয়েছে। এতে ভোগান্তি ছাড়াই ঘরমুখী মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছে।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র প র হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ