ফুটবল বিশ্বকাপ-২০৩৪ এর সফল আয়োজনের পর এবার আরও একটি বৈশ্বিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজক হতে আগ্রহী সৌদি আরব। এবার তারা রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সেটা এককভাবে নয়, বরং কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথভাবে।

মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ ২০৩৫ বা ২০৩৯ সালের রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এশিয়া রাগবি সংস্থা তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। আয়োজক হওয়ার সুযোগ পেলে ইতিহাসের অন্যতম সেরা রাগবি বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশগুলো।

এর আগে এশিয়ায় একবারই রাগবি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে, ২০১৯ সালে জাপানে। পরবর্তী আসর ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এবং ২০৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হবে। ২০৩৫ সালের বিশ্বকাপের বিডিং প্রক্রিয়া আগামী দুই বছরের মধ্যে শুরু হবে, যেখানে ইতালি ও স্পেনও আগ্রহ দেখিয়েছে। যদি ২০৩৫ সালের আয়োজক হতে না পারে, তবে ২০৩৯ সালের জন্য বিড করবে সৌদি আরব, কাতার ও আমিরাত।

আরো পড়ুন:

সৌদি ক্রিকেট লিগ কি আইপিএলকে টেক্কা দিতে পারবে?

সৌদি আরবে ২১ হাজার অবৈধ প্রবাসীকে গ্রেপ্তার

তবে বড় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো রাগবি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কি না। কারণ, এখন পর্যন্ত তারা কখনো রাগবি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ পায়নি। রাগবি বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশকেও বাছাইপর্ব পেরোতে হয়। তাই আয়োজক দেশগুলোর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নিয়ম পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।

রাগবি বিশ্বকাপ সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তীব্র গরমের কারণে ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের মতো এটি ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে, যা অনেকের মতে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’। ফুটবল, গলফ, বক্সিং, টেনিস, রেসিংসহ বিভিন্ন খেলায় বিপুল অর্থ ঢালছে দেশটি। সম্প্রতি সৌদি আরব আইপিএলের মেগা নিলাম আয়োজন করেছে এবং ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের জন্যও বিড করার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ আরব ব শ বক প র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ