আরেকটি বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চায় সৌদি আরব
Published: 1st, April 2025 GMT
ফুটবল বিশ্বকাপ-২০৩৪ এর সফল আয়োজনের পর এবার আরও একটি বৈশ্বিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজক হতে আগ্রহী সৌদি আরব। এবার তারা রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সেটা এককভাবে নয়, বরং কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথভাবে।
মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ ২০৩৫ বা ২০৩৯ সালের রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এশিয়া রাগবি সংস্থা তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। আয়োজক হওয়ার সুযোগ পেলে ইতিহাসের অন্যতম সেরা রাগবি বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশগুলো।
এর আগে এশিয়ায় একবারই রাগবি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে, ২০১৯ সালে জাপানে। পরবর্তী আসর ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এবং ২০৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হবে। ২০৩৫ সালের বিশ্বকাপের বিডিং প্রক্রিয়া আগামী দুই বছরের মধ্যে শুরু হবে, যেখানে ইতালি ও স্পেনও আগ্রহ দেখিয়েছে। যদি ২০৩৫ সালের আয়োজক হতে না পারে, তবে ২০৩৯ সালের জন্য বিড করবে সৌদি আরব, কাতার ও আমিরাত।
আরো পড়ুন:
সৌদি ক্রিকেট লিগ কি আইপিএলকে টেক্কা দিতে পারবে?
সৌদি আরবে ২১ হাজার অবৈধ প্রবাসীকে গ্রেপ্তার
তবে বড় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো রাগবি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কি না। কারণ, এখন পর্যন্ত তারা কখনো রাগবি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ পায়নি। রাগবি বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশকেও বাছাইপর্ব পেরোতে হয়। তাই আয়োজক দেশগুলোর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নিয়ম পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
রাগবি বিশ্বকাপ সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তীব্র গরমের কারণে ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের মতো এটি ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে, যা অনেকের মতে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’। ফুটবল, গলফ, বক্সিং, টেনিস, রেসিংসহ বিভিন্ন খেলায় বিপুল অর্থ ঢালছে দেশটি। সম্প্রতি সৌদি আরব আইপিএলের মেগা নিলাম আয়োজন করেছে এবং ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের জন্যও বিড করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ আরব ব শ বক প র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।