তেঁতুলিয়ায় ট্রলারডুবি: ফুটবল ধরে বেঁচে যান ভাগনে, মামার মরদেহ উদ্ধার
Published: 2nd, April 2025 GMT
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় তেঁতুলিয়া নদীর চরঘুর্ণি এলাকায় ফুটবল খেলতে গিয়েছিলেন জামাল শরীফ (২২) ও জিসান (১৮) নামের দুই তরুণ। তাঁরা সম্পর্কে মামা-ভাগনে। ফেরার পথে ট্রলারডুবিতে নদীতে তাঁরা নিখোঁজ হন। এ সময় ভাগনে জিসান ফুটবল ধরে বেঁচে ফিরলে মামা জামাল শরীফ মারা গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার শেষ বিকেলে তেঁতুলিয়া নদীর চরঘুর্ণি এলাকায় ওই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে চরঘুর্ণি এলাকায় জামাল শরীফের মরদেহ ভেসে ওঠার পর উদ্ধার করে পরিবার।
লাশ উদ্ধার হওয়া জামাল শরীফ জেলার গলাচিপা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি গলাচিপার রতনদী-তালতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমহাওলা গ্রামের কৃষক কালাম শরীফের ছেলে।
জামালের সঙ্গে থাকা ভাগনে মো.
জামালের ভগ্নিপতি সবুজ প্যাদা বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁরা একটি ট্রলার নিয়ে চরঘূর্ণি এলাকায় গিয়ে জামালের অনেক খোঁজাখুঁজি করেন, কিন্তু ওই দিন তাঁকে পাওয়া যায়নি। এরপর আজ সকালে জামালের লাশ নদীতে ভেসে উঠলে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
জামালের মা মোসা. সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমার সোনারচান কইয়া গেছে, “মা আমি ফুটবল খেইল্লাই রাইতে আইয়া পরমু।” আমার বাজান আইছে ঠিকই, কিন্তু কতা কইতে পারে না।’
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়া নদীতে ট্রলার ডুবে জামাল নামের এক তরুণ মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি গলাচিপায়। পরিবার নিহত তরুণের মরদেহ উদ্ধার করে সরাসরি বাড়িতে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।