পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় তেঁতুলিয়া নদীর চরঘুর্ণি এলাকায় ফুটবল খেলতে গিয়েছিলেন জামাল শরীফ (২২) ও জিসান (১৮) নামের দুই তরুণ। তাঁরা সম্পর্কে মামা-ভাগনে। ফেরার পথে ট্রলারডুবিতে নদীতে তাঁরা নিখোঁজ হন। এ সময় ভাগনে জিসান ফুটবল ধরে বেঁচে ফিরলে মামা জামাল শরীফ মারা গেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার শেষ বিকেলে তেঁতুলিয়া নদীর চরঘুর্ণি এলাকায় ওই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে চরঘুর্ণি এলাকায় জামাল শরীফের মরদেহ ভেসে ওঠার পর উদ্ধার করে পরিবার।

লাশ উদ্ধার হওয়া জামাল শরীফ জেলার গলাচিপা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি গলাচিপার রতনদী-তালতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমহাওলা গ্রামের কৃষক কালাম শরীফের ছেলে।

জামালের সঙ্গে থাকা ভাগনে মো.

জিসান বলেন, গতকাল বাড়ি থেকে দশমিনার রনগোপলদী ইউনিয়নের চরঘুর্ণি এলাকায় তাঁরা ফুটবল খেলতে যান। খেলা শেষে বিকেলে নিমহাওলা গ্রাম থেকে একটি ট্রলারে করে তাঁরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ট্রলারে আরও ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রলারটি চরঘুর্ণি এলাকার কাছাকাছি পৌঁছালে তেঁতুলিয়া নদীতে অতিরিক্ত স্রোতে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং যাত্রীসহ ট্রলারটি ডুবে যায়। তখন ফুটবল ধরে তিনি ভেসে থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজন ট্রলার নিয়ে এগিয়ে এসে ডুবে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধার করেন। কিন্তু তাঁর মামা জামালকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

জামালের ভগ্নিপতি সবুজ প্যাদা বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁরা একটি ট্রলার নিয়ে চরঘূর্ণি এলাকায় গিয়ে জামালের অনেক খোঁজাখুঁজি করেন, কিন্তু ওই দিন তাঁকে পাওয়া যায়নি। এরপর আজ সকালে জামালের লাশ নদীতে ভেসে উঠলে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

জামালের মা মোসা. সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমার সোনারচান কইয়া গেছে, “মা আমি ফুটবল খেইল্লাই রাইতে আইয়া পরমু।” আমার বাজান আইছে ঠিকই, কিন্তু কতা কইতে পারে না।’

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়া নদীতে ট্রলার ডুবে জামাল নামের এক তরুণ মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি গলাচিপায়। পরিবার নিহত তরুণের মরদেহ উদ্ধার করে সরাসরি বাড়িতে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় মরদ হ ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

নেশা ও জুয়ায় টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় নেশা ও জুয়া খেলার টাকা না পেয়ে রুকসানা বেগম (৪০) নামে এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বামী শাহ আলম শেখের (৫০) বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (১৪ জুন) রাতে উপজেলার লখাইরচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত শাহ আলম একই গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে।

রবিবার (১৫ জুন) রুকসানা বেগম বলেন, “২৫ বছর আগে শাহ আলমের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমাদের দুইটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পরে থেকেই আমাকে আমার স্বামী নির্যাতন করেন। তিনি প্রতিনিয়ত জুয়ার আসরে বসেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে ফেরেন।”

আরো পড়ুন:

দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

খুলনায় আ.লীগ নেতাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ 

তিনি বলেন, “গতকাল শনিবার রাতে তিনি আমার কাছে জুয়া খেলা ও নেশা করার টাকা চান। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় মারধর শুরু করেন। বাধা দিতে এগিয়ে আসলে ছেলে সিয়াম আহম্মেদ (১২) ও মেয়ে খাদিজা আক্তার সুচনাকেও (২২) মারধর করেন আমার স্বামী।”

রুকসানা বেগম বলেন, “ঘটনার পর আমাকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আমি আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে শাহ আলম শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “এখন পযর্ন্ত থানায় কোনো আভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ