তাপপ্রবাহের পরিধি কিছুটা কমে আসতে পারে আজ
Published: 3rd, April 2025 GMT
চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে চারদিক। দেশের কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। কিছু স্থানে আকাশ মেঘলা থাকছে, ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। বেশ কয়েক দিন ধরেই এমন অবস্থা চলছে। আজ বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের পরিধি কমে আসতে পারে। আর শনিবার নাগাদ এই খরতাপ কিছুটা কমে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল যে ১০ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়, সেগুলো হলো রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, নওগাঁ, দিনাজপুর, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মৌলভীবাজার ও রাঙামাটি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিনও রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা ৩৬ থেকে শুরু করে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
প্রায় চার দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অবশ্য এরই মধ্যে দেশের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ওমর ফারুক আরও বলেন, আগামী শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা কিছুটা কমে যেতে পারে। বৃষ্টি পরের দিন রোববারও থাকতে পারে।
গতকাল রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিনের চেয়ে গতকাল রাজধানীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়। আজ রাজধানীতে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা আছে বলে আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে।
এপ্রিল বছরের উষ্ণতম মাস। এ মাসের গড় তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া এ মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এ মাসে একাধিক তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
ইতিমধ্যে দেশের কয়েকটি স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। এ মাসে পাঁচ থেকে সাত দিন বজ্র, শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এক থেকে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখীর আশঙ্কা আছে।
এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপও সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি নিম্নচাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা নিশ্চিত নয় এখনো।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স লস য় স দশম ক গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?