নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করছে টিকটক, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
Published: 5th, April 2025 GMT
শিল্পীদের নতুন গান প্রচারের পাশাপাশি শ্রোতাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ দিতে নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করছে টিকটক। ‘টিকটক ফর আর্টিস্টস’ নামের প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশে এটি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে টিকটক।
প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ ও মিউজিক অ্যালাই জানিয়েছে, টিকটক ফর আর্টিস্টস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিল্পীরা তাঁদের গান প্রকাশের আগে বিশেষ প্রচারণা চালাতে পারবেন। এর ফলে ভক্তরা গান প্রকাশের আগেই স্পটিফাই ও অ্যাপল মিউজিকে গানটি সংরক্ষণ (প্রি-সেভ) করে রাখতে পারেন। গানের প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি শিল্পীরা নিজেদের গান কোন দেশে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তা–ও জানতে পারবেন। শুধু তা–ই নয়, ভক্তদের কাছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন শিল্পীরা।
আরও পড়ুনটিকটক আসক্তির রহস্য জানা গেল টিকটকেরই তথ্যে১৮ অক্টোবর ২০২৪শিল্পী ও ভক্তদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ তৈরি করতে টিকটক ফর আর্টিস্টস প্ল্যাটফর্মের বেটা সংস্করণে ‘মিউজিক ট্যাব ফ্যান স্পটলাইট’ নামের ট্যাব যুক্ত করা হয়েছে। ট্যাবটিতে ক্লিক করলেই নির্বাচিত ভক্তদের তৈরি ভিডিও শিল্পীদের প্রোফাইলে দেখা যাবে। এর ফলে ভক্তরা আরও সক্রিয়ভাবে শিল্পীদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন এবং শিল্পীরা অনলাইনে নিজস্ব কমিউনিটি গড়ে তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুনটিকটক ভিডিও নির্মাতাদের জন্য সুখবর০৩ মে ২০২৪টিকটক দীর্ঘদিন ধরে সংগীতজগতে নতুন প্রযুক্তি চালুর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই মধ্যে অনেক শিল্পীর গান টিকটকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই শিল্পীদের জন্য পৃথক একটি প্ল্যাটফর্ম চালুর উদ্যোগ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: টেক ক্র্যাঞ্চ
আরও পড়ুনটিকটক ব্যবহারকারী কমছে, কারণ কী২৩ জানুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম প রব ন ট কটক
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫